সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা তখন যন্তরমন্তরে বসে অপরাধীদের শাস্তির দাবি এবং সিবিআই তদন্তে রাজ্যের বাধা দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে সরব। আর কয়েকশো মিটার দূরে দিল্লি প্রেস ক্লাবে বসে রাজীব কুমার-সিবিআই সংঘাতে অস্বস্তিতে থাকা তৃণমূল নেত্রী জানালেন, সারদা কাণ্ডের তদন্ত তাঁর আমলেই শুরু হয়েছিল। টাকা ফেরৎ দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছিল তাঁর সরকার। সিবিআইকে যে তিনি ভয় পান না, তা-ও স্পষ্ট করে মমতা বলেন, ‘‘কারণ সব সিবিআই খারাপ নয়।’’
রাজীব কুমারকে সিবিআইয়ের অফিসারেরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে আসার পর থেকেই নতুন মাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। তৃণমূল শিবিরের দাবি, লোকসভার আগে রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলকে দুর্বল করতেই অতিসক্রিয় করা হয়েছে সিবিআইকে। মমতার কথায়, ‘‘সব সিবিআই অফিসার খারাপ নন। তাঁরাও অফিসার। আমি তাঁদেরও সম্মান করি। কিন্তু মোদী-অমিত শাহ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল সিবিআই অফিসারদের ঘরে ডেকে বলেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে কিছু করার জন্য।’’ মমতার দাবি, তাই এ ভাবে ভোটের আগে তৎপরতা শুরু হয়েছে সিবিআইয়ের অন্দরমহলে।
ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার দুর্নীতির দায় তাঁর সরকারের নয় বলে আজ ফের দাবি করেন মমতা। বলেন, ‘‘চিটফান্ড আশির দশক থেকে চলে আসছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-সেবি কেন কিছু করেনি? আমাদের আমলেই সারদা কর্তাকে কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করা হয়। কমিশন বসে। ফেরৎ দেওয়া হয় দু’শো কোটি টাকার বেশি। আমি চাই, সংস্থার সম্পত্তি বিক্রি করে প্রতারিতদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক।’’
যদিও টাকা ফেরত এবং প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে আজ পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসে দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসেন শ’খানেক প্রতারিত। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ওই প্রতারিতরা সিবিআইকে দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের গ্রেফতারির দাবিতে সরব হন। ওই বিক্ষোভের পিছনে বিজেপির ভূমিকা থাকলেও তা মানতে চাননি বিক্ষোভকারীদের সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া চিট ফান্ড এফেক্টেড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার’-এর মুখপাত্র রাজু সরকার। তিনি বলেন, ‘‘প্রতারিতরা নিজেদের স্বার্থেই আন্দোলন করছেন। কোনও রাজনৈতিক উদ্যোগ নেই।’’