প্রতীকী ছবি।
সংখ্যার বিচারে নিছক হেলাফেরার মতো নয়! রাজধানী দিল্লিতে পঞ্জাবিদের পরেই সংখ্যাধিক্য বাঙালিদের। তা সত্ত্বেও বাংলা ভাষা চর্চার উৎস ক্রমশ শুকিয়ে আসছে গোটা দিল্লিতে। ধুঁকছে বাঙালিদের স্কুলগুলি। ছাত্রের যেমন অভাব, তার চেয়েও বেশি অভাব শিক্ষকের। এই পরিস্থিতিতে রাজধানীতে পুজোর ক’দিন বাংলা ভাষার চর্চাকে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে চিত্তরঞ্জন পার্কের দক্ষিণ পল্লি পুজো সমিতি।
সেই উদ্দেশ্যে এ বার পুজো প্রাঙ্গনে আস্ত একটি গ্রন্থাগার বানিয়ে ফেলেছে দক্ষিণ পল্লি। এই কাজে তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে বঙ্গীয় সমাজ লাইব্রেরি। তারাই বইয়ের জোগান দিচ্ছে পুজো কমিটিকে। পুজোর কর্ণধার অশোক বসুর কথায়, ‘‘পুজো প্রাঙ্গনে বিভিন্ন সাহিত্যিকের রচনা সম্ভার রাখা থাকবে। মানুষ ঠাকুর দেখতে আসবেন। যাঁরা সময় পাবেন, তাঁরা বই নিয়ে নাড়াচাড়া করবেন। বসে পড়ারও ব্যবস্থা থাকবে প্রাঙ্গনে।’’ ইচ্ছুক ব্যক্তিরা যাতে পুজো প্রাঙ্গন থেকেই লাইব্রেরির সদস্য হতে পারেন, তারও ব্যবস্থা রাখার চেষ্টা করছেন উদ্যোক্তরা।
এক দিকে বাংলা ভাষা রক্ষার প্রচেষ্টা, অন্য দিকে ময়ূর বিহার পুজো সমিতি (ফেজ-থ্রি) তাঁদের ২৫ বছরে তুলে ধরতে চাইছে বাংলার লোকশিল্পকে। উদ্যোক্তা পীযূষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পোড়ামাটির মন্দিরের আদলে মণ্ডপ বানানো হচ্ছে। মণ্ডপ বানানো হচ্ছে বাখারি ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে।’’
এক টুকরো নকসি কাঁথার মাঠ এ বার উঠে এসেছে ময়ূর বিহারের ফেজ-১-এর মিলনীর মাঠে। বাংলার আটচালা মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপের দেওয়াল জুড়ে ফুটে উঠেছে নকসি কাঁথার নক্সা, জীবনচর্যার বিভিন্ন দিকগুলি। প্রায় অবলুপ্ত এই পেশার শিল্পীদের বাঁচাতেই এই উদ্যোগ। ওই নকসি কাঁথাগুলি পুজোর পরে কিনতে পারবেন ইচ্ছুক ক্রেতারা। অর্থের একটি অংশ যাবে দুঃস্থ শিল্পীদের কল্যাণে।
সন্ত্রাস দীর্ণ আজকের দুনিয়ায় উগ্রপন্থা ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইকে এ বারের থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে করোলবাগ পুজো সমিতি। দিল্লির অন্যতম পুরনো এই পুজো সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীপক ভৌমিক বলেন, ‘‘গোটা পৃথিবী সন্ত্রাসবাদের সমস্যায় ভুগছে। অসুররূপী এই সন্ত্রাসদমনই হল আমাদের পুজোর থিম। আজকের যুব সমাজের কাছে বড় সমস্যা হল মাদকও। যুব সমাজের মধ্যে মাদকের ছোবল রুখতে সচেতনতা বৃদ্ধিও আমাদের লক্ষ্য। যদি এই থিমের মাধ্যমে একজনও মাদকের নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন, সেটাই হবে আমাদের পাওনা।’’