কয়েক হাজার পর্ন সাইট এবং টরেন্টের প্রায় সব ওয়েবসাইট ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। শুধু নিষিদ্ধ করাই নয়, ভুল করে সে সব ওয়েবসাইট খুললে ৩ বছর জেলের ঘানিও টানতে হতে পারে বলে সরকারি তরফে জানানো হয়েছে। সঙ্গে হতে পারে ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও। তাই আগেভাগে জেনে নিন কোন ওয়েবসাইটগুলোর দিকে একদম পা মাড়াবেন না।
কয়েক হাজার পর্ন সাইট এবং টরেন্টের প্রায় সব ওয়েবসাইট ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। শুধু নিষিদ্ধ করাই নয়, ভুল করে সে সব ওয়েবসাইট খুললে ৩ বছর জেলের ঘানিও টানতে হতে পারে বলে সরকারি তরফে জানানো হয়েছে।
শুধু জেল নয়, সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ওই সব নিষিদ্ধ ওয়েবসাইট খোলার চেষ্টা করলে ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দিতে হতে পারে।
শিশুদের পর্ন ছবি এমন কী বিভিন্ন টরেন্ট ওয়েবসাইটে সিনেমা ডাউনলোডের মতো সাইবার অপরাধ রুখতে মোদী সরকার কড়া হাতে নজরদারি চালাচ্ছে। ধরা পড়লে ১৯৫৭-র কপিরাইট অ্যাক্টের ৬৩, ৬৩-এ, ৬৫ এবং ৬৫-এ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হবে অভিযুক্তকে।
২০১৫ সালের অগস্টে ৮৫৭টি পর্নসাইট নিষিদ্ধ করা হয়।
পর্নসাইটের পাশাপাশি, ১৭০টির মতো বিতর্কিত ওয়েবসাইটও ব্যান করেছে কেন্দ্র।
২০১৬ সালের জুন মাসে, এসকর্ট সার্ভিস দেয় এমন ২০০টিরও বেশি ওয়েবসাইটকে নিষিদ্ধ করে কেন্দ্র।
ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা (আইএসপি)-এর সহযোগিতায় ওই সাইটগুলির ইউআরএল (URL) ব্লক করে দেওয়া হয়।
দেশে বেড়ে চলা যৌন নিগ্রহ রুখতে পর্নো ওয়েবসাইটগুলি বন্ধ করার জন্য ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। আপিলে বলা হয় দিল্লি গণধর্ষণের মতো নারকীয় ঘটনার আগে অভিযুক্তরা মোবাইলে পর্ন ছবি দেখেছিল। ওই ধরনের ওয়েবসাইটগুলি বিকৃত মানসিকতার সৃষ্টি করছে বলেও দাবি করা হয়।
তবে পর্নসাইট নিষিদ্ধ করা নিয়ে বিতর্কও কিছু কম হয়নি। সাইট ব্যবহারকারীদের অভিযোগ ছিল, শিশুদের নিয়ে তৈরি পর্ন ছবির প্রচার রুখতে নাগরিকদের ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকছে সরকার, যা সমর্থনযোগ্য নয়।
টেলিকম সংস্থাগুলিরও দাবি ছিল, সব পর্ন সাইট বন্ধ করা সম্ভব নয় সরকারের পক্ষে। তথ্য আদানপ্রদানের যুগে এই দাবি এক অর্থে হাস্যকর।
বিতর্কের মুখে পড়ে বেশ কিছু ওয়েবসাইটের উপর থেকে রাশ আলগা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। শিশু পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত বিষয়বস্তু নেই এমন ওয়েবসাইটগুলোর উপর থেকে ‘ব্লকিং’ তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় আইএসপিগুলিকে।
দেশে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন, শিশু ধর্ষণের ঘটনা বাড়তে থাকায় ফের নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। অনলাইনে শিশু পর্নোগ্রাফি রুখতে সম্প্রতি নতুন পোর্টাল চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
অনলাইনে শিশু পর্ণোগ্রাফি রুখতে এ বার ডিজিটাল মিডিয়াকেই হাতিয়ার করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। চালু হল তাদের নতুন পোর্টাল-ডব্লুডব্লুডব্লু.সাইবারপুলিশ.গভ.ইন (www.cyberpolice.gov.in)। এর সঙ্গে থাকছে হেল্পলাইন নম্বর-১৫৫২৬০।
পোর্টালের নেটওয়ার্ক জোরদার করার জন্য প্রত্যেকটি রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে নোডাল সাইবার সেল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নজরদারি চালানোর জন্য নিয়োগ করার কথা নোডাল অফিসারদের।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আশা, ইন্টারনেটে ধর্ষণ, গণধর্ষণ কিংবা শিশু পর্নোগ্রাফি ছবি এবং ভিডিয়ো আটকানোর ব্যবস্থা এবার অনেকটাই পোক্ত হবে।
জানা গিয়েছে, দেশের ১৫ হাজার থানাকে এই পোর্টালের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
শিশুদের নিয়ে নীল ছবি, গণধর্ষণ কিংবা ধর্ষণের ভিডিয়ো বা ছবি চোখে পড়লেই,তা প্রশাসনের নজরে আনার জন্য পোর্টালে আপলোড করা যাবে।
শুধু তাই নয়, ওই সব ছবি কিংবা ভিডিয়ো তুলে নেওয়ার জন্য ইন্টারনেটের সার্ভিস প্রোভাইডারকে (আইএসপি) নির্দেশ দেওয়া যাবে। সেই সঙ্গে নেওয়া হবে পুলিশি ব্যবস্থাও।
গতকাল, বৃহস্পতিবার চালু হওয়া পোর্টাল নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠেছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। পোর্টালের ইউআরএল-এ ক্লিক করলে দেখাচ্ছে ‘সার্ভিস নট অ্যাভলেবল’।
অভিযোগ, কাজ করছে না হেল্পলাইন নম্বরও। গতকাল চালু হওয়া ওই হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে আজ জানা গেল, ‘‘আপনি একটি ভুল নম্বরে ডায়াল করেছেন’’।
অনলাইনে শিশু পর্নোগ্রাফি রুখতে এর আগেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিল শীর্ষ আদালত। সেই মতোই ব্যবস্থা নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, শুরুতেই হোঁচট খেল সেই প্রচেষ্টা।
পুলিশ থেকে সাধারণ মানুষ, পোর্টালে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছেন সকলেই। উঠছে যান্ত্রিক ত্রুটির অভিযোগও।
সব মহলে প্রশ্ন উঠেছে, ঢাক ঢোল পেটানোই সার হল। একটা পোর্টাল চালু করার মতো পরিকাঠামোও সরকারের নেই।
বাস্তবেই কি প্রশাসন উদ্যোগী? শুধু প্রচার নয়, তার কার্যকারিতার দিকেও তাকিয়ে গোটা দেশ।