Cyclone Michaung

মিগজাউমের দাপটে তৃতীয় দিনেও জলমগ্ন চেন্নাই! বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন বহু এলাকা, ত্রাণশিবিরে চলছে কাজ

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম মঙ্গলবার অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ে। তার পর তিন ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চলে। এর পর অবশ্য শক্তি হারায় ঘূর্ণিঝড়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০২:১১
Share:

বন্যায় বিপর্যস্ত চেন্নাই। ছবি: পিটিআই।

ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের জেরে লন্ডভন্ড গোটা চেন্নাই শহর। একটানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির বিস্তীর্ণ এলাকা। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই। বৃষ্টি থেমে গেলেও, জল জমে আছে চার দিকে। তৃতীয় দিনেও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন বহু এলাকা।

Advertisement

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম মঙ্গলবার অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ে। তার পর তিন ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চলে। এর পর অবশ্য শক্তি হারায় ঘূর্ণিঝড়। তবে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের দাপটে থমকে গিয়েছে তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশের জনজীবন।

তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, তিন দিন পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে বহু এলাকা। ঝড় এবং বৃষ্টির দাপটে অনেক জায়গাতেই বহু গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। সেই কারণে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুতের তার জলের নীচেও ডুবে আছে। বিপদ এড়ানোর জন্য বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে বহু এলাকা। তবে পরিস্থিতি সামান্য নিয়ন্ত্রণে এলেই শীঘ্রই বিদ্যুৎ ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় এবং একটানা অতিভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন ভেলাচেরি এবং তামবারামের বিভিন্ন এলাকা।

Advertisement

দুর্যোগ পরিস্থিতিতে চেন্নাই এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে সরকারি স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়ার জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলিকে অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন। চেন্নাইয়ের অধিকাংশ জায়গাতেই নিচু এলাকাগুলিতে জল ঢুকছে। অনেকের বাড়ির মধ্যেও জল ঢুকে গিয়েছে। জল ঢুকে যাওয়ার কারণে অনেক পরিবারকেই বাড়িছাড়া হতে হয়েছে। এমনকি, পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলিও জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। চেন্নাইয়ের কোলাথুর এলাকার মাছবিক্রেতা রাজারাম বলেন, “অতিভারী বৃষ্টির জেরে ৩০টিরও বেশি দোকানে জল ঢুকে গিয়েছে। দু’দিন হয়ে গেল এখনও এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এই বিপর্যয়ে আমার চিন থেকে আমদানি করা বহু মাছ মরে গিয়েছে। বহু টাকার লোকশান হয়ে গেল।” পার্বতী নামে এক মহিলা সরকারি ত্রাণশিবিরে রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের এলাকা জলে ভেসে গিয়েছে। সরকারি ত্রাণশিবিরে আমরা খাবার, পানীয় জল এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাচ্ছি।”

সেনবাঘাম একজন ত্রাণশিবিরের কর্মী বলেন, “আমার বাড়ি রাধাকৃষ্ণশলাইয়ে। একটানা বৃষ্টি হওয়ায় আমার এলাকাও জলে ভেসে গিয়েছে। কারও কোনও ক্ষতি হয়েনি তবে জলবদ্ধ পরিস্থিতির কারণে এলাকার সকলকে ত্রাণশিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে তাঁদের খাবার, পানীয় জল এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে।” কিলপক এবং কাট্টুপক্কম এলাকার বহু জায়গা এখনও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।

দুর্যোগে আরও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ইতিমধ্যেই পাঁচ হাজার ত্রাণকেন্দ্র তৈরি করেছে তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন উদ্ধারকাজের বিষয়ে তদারকি করছেন। তামিলনাড়ুর সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যে ত্রাণ তৎপরতা পুরোদমে চলছে। জলমগ্ন এলাকায় মানুষদের উদ্ধার করতে মধ্যরাতে নৌকাও নামানো হয়েছিল। এই বিপর্যয়ের সময় তামিলনাড়ু পুলিশ একটি হেল্পলাইন নম্বরও ঘোষণা করেছে।

তামিলনাড়ুর মুখ্যসচিব শিবদাস মিনা জানান, শহরের অনেক এলাকায় জল সরিয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরেয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। বেশ কিছু রাস্তা পরিষ্কার করা হয়েছে এবং পরিষ্কার পানীয় জলের ব্যবস্থাও ইতিমধ্যে করা হয়েছে। বহু পরিবারকে শুকনো খাবার, পাউরুটি এব‌ং দুধের প্যাকেটও দেওয়া হয়েছে। তবে কাজ এখনও অনেক বাকি আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন