বিক্ষুব্ধদের আশ্রয় তৃতীয় মোর্চা, কপালে ভাঁজ লালু-নীতীশদের

কারও পৌষ মাস, জোটের সর্বনাশ! বিহারের নির্বাচনে লালু-নীতীশ জোটের বিক্ষুব্ধদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে মুলায়ম-শরদ পওয়ার-পাপ্পু যাদবের তৃতীয় মোর্চা।

Advertisement

দিবাকর রায়

পটনা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৪২
Share:

কারও পৌষ মাস, জোটের সর্বনাশ!

Advertisement

বিহারের নির্বাচনে লালু-নীতীশ জোটের বিক্ষুব্ধদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে মুলায়ম-শরদ পওয়ার-পাপ্পু যাদবের তৃতীয় মোর্চা। টিকিট না পাওয়া তাবড় নেতা থেকে সদ্য গোঁফ গজানো তরুণ-তুর্কি, সকলেই রাজনীতির ভাগ্যপরীক্ষায় বেছে নিচ্ছেন এই তৃতীয় মোর্চাকেই। তৃতীয় মোর্চা মাথাচাড়া দেওয়ায় হাতে চাঁদ পেয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বহীন নেতারাও।

মাসখানেক আগেও যে জোটের কোনও অস্তিত্ব ছিল না, আচমকা সেই জোটেই নাম লেখাতে ব্যস্ত বিহার রাজনীতির বড় বড় নেতারা। মুলায়ম সিংহ যাদব থেকে শরদ পওয়ার, নিজেদের নির্বাচনী কর্মসূচি ঠিক করে নিয়েছেন। বিশেষত এই নেতাদের নিশানা বিজেপি-বিরোধী ভোটের জন্য পরিচিত পূর্ব বিহার এবং সীমাঞ্চল এলাকা। সেখানেই দলের খাতা খোলাতে উৎসাহী তাঁরা। ইতিমধ্যেই জোটের নেতারা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জোটের তরফে যত টিকিট বিতরণ করা হয়েছে তার মধ্যে বেশির ভাগই লালু-নীতীশের দল থেকে আসা বিক্ষুব্ধ নেতা-বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী রামধনী সিংহ টিকিট না পেয়ে সমাজবাদী পার্টির সাইকেলে সওয়ারি হয়েছেন। আরজেডিতে গুরুত্ব না পেয়ে দল ছেড়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আরজেডি সহ-সভাপতি রঘুনাথ ঝা। তিনিও তাঁর অনুগামীদের সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেওয়ানোর জন্য চেষ্টা করছেন। গত নির্বাচনে কাটিহার থেকে জেডিইউয়ের টিকিটে লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন রামপ্রকাশ মাহাতো। তিনি শরদ পওয়ারের দলে নাম লিখিয়ে ভোটে সামিল হয়েছেন। সমস্তিপুর জেলার মহিউদ্দিননগরের আরজেডি বিধায়ক অজয়কুমার বুলগানিন দলের টিকিট না পেয়ে পাপ্পু যাদবের জন অধিকার পার্টির হাত ধরেছেন। নাথনগর থেকে পাপ্পুর দলের প্রার্থী হয়েছেন জেডিইউয়ের বিদ্রোহী নেতা আবু কওসর। কওসর গত বছরই আরজেডি ছেড়ে জেডিইউয়ে যোগ দিয়েছিলেন। তার আগে আরজেডির টিকিটে তিনি ভাগলপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। গত উপ-নির্বাচনে পরাবত্ত বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লোক জনশক্তি পার্টির টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন সুহেলি মেহেতা। তিনি এ বারে পাপ্পু যাদবের দলের টিকিটে লড়বেন।

Advertisement

এখানেই শেষ নয়, আরারিয়ার আরজেডি সাংসদ তসলিমুদ্দিনকে নিজের দলে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন পাপ্পু। ঘনিষ্ঠরা টিকিট না পাওয়ায় লালুর উপরে ক্ষুব্ধ তসলিমুদ্দিন। ডুমুরিয়ার জেডিইউ বিধায়ক দাউদ আলি পাপ্পুর ডাকে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই জন অধিকার পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। আরজেডির দুই ‘বিদ্রোহী’ নেতা ভগবান সিংহ কুশওয়াহা এবং রাঘবেন্দ্র প্রতাপ সিংহ টিকিট না পাওয়ায় লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভগবান সিংহ বলেছেন, ‘‘খুব শীঘ্রই আমরা এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’’ তাঁদেরও টিকিট দিতে তৈরি তৃতীয় মোর্চা। বিজেপি-বিরোধী ভোট কাটাকাটির এই খেলায় স্বভাবতই কপালে ভাঁজ লালু-নীতীশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন