পুরীতে রথযাত্রা উপলক্ষে ভক্তদের ভিড়। ছবি: পিটিআই।
অবশেষে শনিবার পুরীর গুণ্ডিচা মন্দিরে প্রবেশ করল তিন রথ— নন্দীঘোষ, তালধ্বজ, দর্পদলন। শুক্রবার রাতে সেখানে পৌঁছোনোর কথা ছিল তিনটি রথের। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা সম্ভব হয়নি। সারা রাত রাস্তায় থাকা রথেই ছিল জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার বিগ্রহ। মোতায়েন ছিল কড়া নিরাপত্তা। এক দিন পরে গন্তব্যে পৌঁছলো তিনটি রথ। জগন্নাথ মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গুণ্ডিচা মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করানো হবে তিন বিগ্রহ।
রীতি মেনে দাদা বলভদ্রের রথ তালধ্বজ চলে সকলের আগে। তার পরে বোন সুভদ্রার দর্পদলন। সকলের শেষে চলে জগন্নাথের নন্দীঘোষ। লক্ষ লক্ষ মানুষ দড়ি দিয়ে সেই রথ টেনে নিয়ে যান। জগন্নাথ মন্দির থেকে ২.৬ কিলোমিটার দূরে গুণ্ডিচা মন্দিরে হল তিনটি রথের গন্তব্য। কিন্তু শুক্রবার যাত্রা শুরু হলেও সেখানে পৌঁছোতে পারেনি তিনটি রথ। তার আগেই ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৬০০ জন। হাসপাতালে এখনও ভর্তি অন্তত ৭০ জন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে থেমে গিয়েছিল যাত্রা। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ আবার শুরু হয় যাত্রা। দুপুর ১১টা ২০ মিনিটে গুণ্ডিচা মন্দিরে পৌঁছোয় বলভদ্রের তালধ্বজ। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে পৌঁছোয় সুভদ্রার দর্পদলন। দুপুর ১টা ১১ মিনিটে পৌঁছোয় জগন্নাথের নন্দীঘোষ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবারও রথযাত্রায় শামিল হয়েছিলেন প্রায় আট লক্ষ মানুষ।
শুক্রবার ভক্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছিল ১০ লক্ষ। তাতেই বিপত্তি বলে মনে করছে প্রশাসন এবং মন্দির কর্তৃপক্ষের একাংশ। বিপত্তির কারণ শুধু ভিড় নয়। প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, গ্র্যান্ড রোডে (বড় দণ্ড) তালধ্বজ রথটি যখন বাঁক ঘুরছিল, সে সময়ে বিপত্তি হয়। কাঠের তৈরি তালধ্বজ রথটি এতটাই বড়, যে তা বাঁক ঘুরতে পারছিল না। এর ফলে দীর্ঘ ক্ষণ থেমে থাকে শোভাযাত্রা। শুক্রবার বলভদ্রের রথ তালধ্বজ বড় দণ্ডের উপরে বলগণ্ডি পর্যন্ত যেতে পারে। সুভদ্রার রথ দর্পদলন মাঝপথে মার্কেট চক অবধি পৌঁছয়। স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তারক্ষীদের একটি সূত্র বলছে, রথ সংলগ্ন ঘেরাটোপে বহু মানুষ ঢুকে পড়েন। সে কারণে অবাধে চলতে পারেনি রথ। বার বার বাধা পেয়েছে যাত্রা। শনিবার আরও প্রস্তুত হয়েই নেমেছিল পুলিশ এবং প্রশাসন। রথের যাত্রাপথে বসানো হয়েছিল এআই চালিত সিসি ক্যামেরা। অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (ট্র্যাফিক) দয়াল গঙ্গওয়ার জানিয়েছেন, ভক্তদের সুরক্ষার কথা ভেবেই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।