‘মমতাদি’র ব্রিগেডে সমর্থন এ বার রাহুলের, বিড়ম্বনায় প্রদেশ কংগ্রেস!

ঐক্য়বদ্ধ ভারতের শক্তিশালী বার্তা ব্রিগেড সমাবেশ থেকেই ছড়িয়ে পড়বে। সমাবেশের ২৪ ঘণ্টা আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা ও সমর্থন জানিয়ে এই বার্তাই পাঠালেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:০৭
Share:

মমতাকে বার্তা রাহুলের। গ্রাফিক- তিয়াসা দাস।

ঐক্যবদ্ধ ভারতের শক্তিশালী বার্তা ব্রিগেড সমাবেশ থেকেই ছড়িয়ে পড়বে। সমাবেশের ২৪ ঘণ্টা আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা ও সমর্থন জানিয়ে এই বার্তাই পাঠালেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। যার জেরে বিড়ম্বনায় প্রদেশ কংগ্রেস! রাহুলের বার্তার ‘ব্যাখ্যা’ দিতে হিমসিম রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল!

Advertisement

দেশের তাবড় বিরোধী নেতা-নেত্রীদের নিয়ে ব্রিগেডে আজ, শনিবার সমাবেশ করছেন তৃণমূল নেত্রী। সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকেও তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এআইসিসি মমতার সমাবেশে পাঠাচ্ছে লোকসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়গেকে। নিজে না এলেও রাহুল শুক্রবার বার্তা পাঠিয়ে বিজেপি তথা বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ লড়াইয়ের প্রতিই সংহতি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গেই তৃণমূল নেত্রীকে ‘মমতাদি’ বলে সম্বোধন করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। তিনি বলেছেন, ‘এই ঐক্যের ছবি তুলে ধরার জন্য মমতাদি’র প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি। আমার আশা, একসঙ্গেই আমরা ঐক্যবদ্ধ ভারতের শক্তিশালী বার্তা দিতে পারব।’

তৃণমূল নেত্রীর উদ্দেশে বার্তায় রাহুল লিখেছেন, ‘সত্যিকারের জাতীয়তাবাদ ও উন্নয়নকে রক্ষা করা যায় গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তির উপরে দাঁড়িয়ে। এই বিশ্বাস থেকেই সমগ্র বিরোধী শিবির এখন একজোট। আর এই ধারণাগুলোকেই বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদী ধ্বংস করতে চাইছেন’। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘আমাদের আদর্শ রক্ষা করতে যে বাংলার মানুষ সর্বদা সামনে থেকেছেন, তাঁদের অভিবাদন জানাচ্ছি’।

Advertisement

এর আগে দিল্লিতে সনিয়ার ডাকে বিরোধী নেতৃত্বের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন মমতা। চন্দ্রবাবু নায়ডুর উদ্যোগে বিরোধী বৈঠকেও রাহুল-মমতা একসঙ্গে হাজির থেকেছেন। এ বার বাংলায় তৃণমূলের সমাবেশে আগে রাহুলের সমর্থনের বার্তায় লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-বিরোধী ঐক্যের বাতাবরণ আরও মজবুত হবে বলেই মনে করছেন বিরোধী শিবিরের নেতারা।

স্বয়ং রাহুলের বার্তা আসায় তৃণমূল শিবিরে যতটা স্বস্তি, ততটাই অস্বস্তিতে প্রদেশ কংগ্রেস। খাতায়-কলমে এ রাজ্যে তৃণমূলের সরকারের বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী দল তারাই। রাজ্য় রাজনীতিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই চলবে, এ কথা বোঝাতে এ দিনহিমসিম খেয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। তৃণমূল ও বাম শিবির থেকে আসা কলকাতার ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ১৫০০ কর্মীর হাতে বিধান ভবনে এ দিন কংগ্রেসের পতাকা ধরানোর পরে সোমেনবাবুর দাবি, ‘‘বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের লড়াই আদর্শগত। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা যাঁরা বলছেন, সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে অখিলেশ-মায়াবতী জোট করার পরেও বিজেপি-বিরোধিতার জন্যই রাহুল তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। বাংলাতেও বিজেপি-বিরোধী সমাবেশে কংগ্রেস সভাপতি বার্তা দিয়েছেন মানে এটা তো বলেননি, আপনি কংগ্রেস কর্মীদের খুন করুন, দল ভাঙান তবু আমরা সমর্থন করব!’’

দিল্লি থেকে খড়গে এবং অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি এলেও প্রদেশ কংগ্রেস ব্রিগেডে আমন্ত্রিত নয় এবং তাঁদের যাওয়ার কথাও নেই বলে সোমেনবাবু জানিয়েছেন। যদিও সূত্রের খবর, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে ফোন করেছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের তরফে কোনও নির্দেশ নেই বলেই মান্নান এড়িয়ে গিয়েছেন। দলের অন্দরে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের আশঙ্কা, কংগ্রেস এবং তৃণমূল কাছাকাছি এলে রাজ্যে বিরোধী পরিসর আরও বেশি করে বিজেপির দখলে যাবে। ঠিক যেমন, ইউপিএ-১ আমলে দিল্লিতে বাম সমর্থনে কংগ্রেস সরকার চলায় বাংলায় শাসক সিপিএমের বিরোধী পরিসর তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন