তৃণমূল প্রার্থী পিভি আনবরের মনোনয়ন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
কেরলের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে দিল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার কমিশন সূত্রে জানা যায়, তৃণমূল প্রার্থী পিভি আনবারের মনোনয়ন বাতিল হয়ে গিয়েছে। তবে তাঁর ভোটে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। কারণ নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন গ্রহণ করেছে কমিশন।
রবিবার সর্বভারতীয় তৃণমূলের তরফে কেরলের নিলাম্বুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে প্রাক্তন বিধায়ক আনবারের নাম ঘোষণা করা হয়। এর আগেও তিনি ওই কেন্দ্র থেকে দু’বার বিধায়ক হয়েছেন। নাম ঘোষণার পরেই সোমবার মনোনয়ন দাখিল করেন ওই তৃণমূল প্রার্থী। তথ্যগত ত্রুটি থাকায় তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে আনবারের মনোনয়ন বাতিল করে দেওয়া হয়। সোমবার তিনি জোড়া মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। একটি তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে, অন্যটি নির্দল প্রার্থী হিসাবে।
নির্দল প্রার্থী হিসাবে আনবার যে মনোনয়নপত্রটি দাখিল হয়েছিল, তা গৃহীত হয়েছে। তাই তাঁকে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে নির্দল প্রার্থী হিসাবেই। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও আনবারকে নির্দল প্রার্থী হিসাবেই বিবেচনা করা হয়েছে। স্ক্রুটিনিপর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে প্রতীক দেবে কমিশন।
মনোনয়ন বাতিল প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কেরলে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নয়, ফলে আনবরের দলীয় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে নির্দল প্রার্থী হিসাবে জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রটি বৈধতা পাওয়ায় ভোটে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি তৃণমূল প্রতিষ্ঠা হলেও, ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর প্রথমবার জাতীয় দলের স্বীকৃতি পায় তারা। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে সেই স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেয় নির্বাচন কমিশন। ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল ভারতের নির্বাচন কমিশন ‘অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস’-এর জাতীয় দলের স্বীকৃতি প্রত্যাহৃত হয়। তৃণমূল জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেয়েছিল, যখন এটি পশ্চিমবঙ্গ, মণিপুর ও ত্রিপুরায় রাজ্য-স্বীকৃত রাজনৈতিক দল ছিল। তবে পরবর্তী নির্বাচনে দলটি জাতীয় রাজনৈতিক দলের তকমা পাওয়ার শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়। জাতীয় স্বীকৃতি থাকলে তৃণমূল দেশের ভোট রাজনীতিতে বেশকিছু অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা পেত। প্রধানত রাজনৈতিক দল হিসাবে সমগ্র দেশে একটি অভিন্ন নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহারের অধিকার পেত তারা। পাশাপাশি, সরকারি সম্প্রচার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারের জন্য নির্ধারিত সময়ও বরাদ্দ হত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের জন্য। এ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের সর্বদলীয় বৈঠকে অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা এবং দিল্লিতে পার্টি অফিসের জন্য বরাদ্দকৃত স্থান পাওয়ার অধিকারী ছিল বাংলার শাসকদল। যে হেতু নির্বাচন কমিশনের শর্ত অনুযায়ী তৃণমূল বর্তমানে একটি আঞ্চলিক দল তাই নির্বাচন কমিশন কেরলের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে দিয়েছে বলেই কমিশন সূত্রে খবর।
রাজনৈতিক মহলের মতে, আনবর যে হেতু নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পেয়েছেন তাই তাঁকেই নিজেদের প্রার্থী হিসাবে সমর্থন দেওয়ার সুযোগ থাকছে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। আগামী ১৯ জুন সারা দেশের কয়েকটি বিধানসভার সঙ্গে নিলাম্বুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। ফল ঘোষণা ২৩ জুন।