Tripura TMC

‘অতীত অভিজ্ঞতা ভাল নয়, আমাদের শবও ফিরতে পারে’, হামলার আশঙ্কা নিয়েই ত্রিপুরার পথে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল

বুধবার সকালে ত্রিপুরার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। দলে রয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, যাদবপুরের সাংসদ তথা তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ, জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা এবং টিএমসিপি নেতা সুদীপ রাহা। এ ছাড়া রয়েছেন সাংসদ ও রাজ্যসভার সদস্য সুস্মিতা দেব।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ১০:৪৪
Share:

বুধবার সকালে ত্রিপুরার উদ্দেশে রওনা দিল তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। — নিজস্ব চিত্র।

ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় তৃণমূলের রাজ্য কার্যালয়ে হামলার ঘটনাকে ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনার পরদিনই ত্রিপুরায় প্রতিনিধি দল পাঠালেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে ত্রিপুরার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল। দলে রয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, যাদবপুরের সাংসদ তথা তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ, জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা এবং টিএমসিপি নেতা সুদীপ রাহা। এ ছাড়া, রয়েছেন সাংসদ ও রাজ্যসভার সদস্য সুস্মিতা দেব। ত্রিপুরা গিয়ে সেখানকার কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলবে ছয় সদস্যের এই দল। এ ছাড়া, দলীয় কিছু কর্মসূচিও রয়েছে।

Advertisement

বিমানবন্দরে ঢোকার আগে কুণাল বলেন, ‘‘আগরতলায় আমাদের রাজ্যদফতর ভাঙচুর করেছে বিজেপি-আশ্রিত সমাজবিরোধীরা। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে দলের তরফে আমাদের পাঠানো হচ্ছে। তবে ত্রিপুরায় আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। অতীতে সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা হয়েছে, আমাদের আটক করা হয়েছে। সে রাত্রে কোনওক্রমে আমাদের প্রাণ বেঁচেছিল। গতকাল থেকে সমাজমাধ্যমে আবার সেই হুমকি শুরু হয়েছে। আমরা আজ যাচ্ছি, আমাদের মৃতদেহও ফিরতে পারে।’’

কুণাল আরও জানান, বিজেপির কারও কারও দাবি, নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর আক্রমণের জের ধরেই তৃণমূলের দফতরে হামলা হয়েছে। তবে কুণাল স্পষ্ট জানিয়েছেন, ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে কারও ওপর কোনও রকম শারীরিক আক্রমণকে তাঁরা সমর্থন করেন না। ওই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সদস্যের যোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

একই সুরে সায়নী বলেন, ‘‘আমরা দলীয় কর্মীদের বার্তা দিতে যাচ্ছি যে তাঁরা ওখানে একা নন। দল তাঁদের পাশে রয়েছে। আর সব কিছুতে বিজেপি তৃণমূলকে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে জ্ঞান দেয়। ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলা কোথায়? পুলিশের সামনে কাল পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হল। অতীতে আমাদের বার বার দলের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়েও যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে, তাতে বরং ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।’’

সাংসদ খগেনের উপর হামলা প্রসঙ্গে যাদবপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘খগেন মুর্মু ও শঙ্কর ঘোষের উপর হামলাকে সমর্থন করি না। তাতে তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়। তবে এটা সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। সারা বছর ওঁরা বেপাত্তা থাকেন, আর বিপদের সময় ফোটোশুট করতে যান! তা হলে জনরোষের মুখোমুখি তো হতেই হবে।’’

মঙ্গলবার রাতে আগরতলায় তৃণমূলের রাজ্য কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার আগরতলার বনমালীপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূলের অভিযোগ, সেই বিক্ষোভ মিছিল থেকেই তাদের ত্রিপুরার রাজ্য কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার সুর বেঁধে দিয়েছিলেন, আর সেই রেশ ধরেই ত্রিপুরায় হামলা চালিয়েছেন বিজেপির লোকেরা। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। তাদের পাল্টা দাবি, কোনও হামলাই হয়নি। ঘটনার সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘বাংলায় ব্যালট বাক্সে তৃণমূলকে হারাতে পারেনি বিজেপি। যেখানে তারা ক্ষমতায়, সেখানে হিংসা ছড়াচ্ছে। ত্রিপুরা পুলিশের চোখের সামনে ত্রিপুরায় ওরা আমাদের দফতর ভাঙচুর করেছে। তাদের প্রতিশোধমূলক এবং আইন-শৃঙ্খলাবিহীন মানসিকতারই পরিচয় দিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement