প্রতীকী ছবি।
রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সংসদ চত্বরের বিক্ষোভে তৃণমূলকে শামিল হতে অনুরোধ করেছিল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অনুরোধে না বলেননি। কিন্তু আজ কংগ্রেসের ওই বিক্ষোভে নামমাত্র প্রতিনিধি পাঠানো হল তাঁর নির্দেশে। সংসদের দুই কক্ষের নেতা বা অভিজ্ঞ কোনও সাংসদ নয়, পাঠানো হয় ইদ্রিশ আলি এবং ইমরানকে। তাঁরাও দাঁড়িয়ে ছিলেন পিছনের সারিতে।
ক’দিন আগেই অসমের নাগরিক পঞ্জিতে ৪০ লক্ষের নাম বাদ পড়া ও শিলচর বিমানবন্দরে দলের সাংসদদের আটকে দেওয়ার প্রতিবাদে সংসদে সরব হয়েছিল তৃণমূল। নিজস্ব অঙ্কে কংগ্রেস তখন তৃণমূলের পাশে থাকেনি। উল্টে কংগ্রেসের বিভিন্ন নেতার মন্তব্য অস্বস্তিই বাড়িয়েছিল তৃণমূলের। রাফাল নিয়ে বিক্ষোভে আজ তৃণমূলের এই নামকে ওয়াস্তে উপস্থিতি কি তারই পাল্টা?
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, ব্যাপারটা বিশেষ একটি ঘটনা কেন্দ্রিক নয়। সম্প্রতি কংগ্রেস সম্পর্কে যে নীতি নিয়ে চলছেন মমতা, এটি তারই পরবর্তী ধাপমাত্র। চলতি অধিবেশনে আস্থা ভোটে অথবা গত কাল রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে ভোটাভুটির ক্ষেত্রে কংগ্রেসের উদ্যোগে শামিল হয়েছে তৃণমূল। কিন্তু তা-ও ছিল নমো নমো করে। তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যের নির্যাস, অন্য বিরোধী নেতাদের সঙ্গে ভাল ভাবে কথা না বলেই তাড়াহুড়ো করে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছে রাহুল গাঁধীর দল। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে সমর্থন চেয়ে রাহুল ফোন করেননি বলেই আম আদমি পার্টির সাংসদরা ভোট বয়কট করেছেন। তৃণমূল তা-ও বিরোধী ঐক্যের স্বার্থে কংগ্রেসের পদক্ষেপগুলির বিরোধিতা করছে না। কিন্তু এই ধরনের রাজনৈতিক পদক্ষেপ মেনেও নিচ্ছেন না মমতা। ঘরোয়া ভাবে এমনও বলা হচ্ছে, বিরোধী ঐক্যের পথে বাধা কংগ্রেসই।
পাশাপাশি এই প্রশ্নও উঠছে যে, মোদী সরকার বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তৃণমূল, বিএসপি, বিজেডির মতো আঞ্চলিক দলগুলির উপরে রাজনৈতিক চাপ তৈরি করছে কি না। এবং সেই চাপের কারণেই কি এই দলগুলি বিজেপির বিরুদ্ধে প্রকারান্তরে কিছুটা নরম অবস্থান নিচ্ছে? এই ধরনের কোনও সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে তাড়াহুড়ো করে প্রার্থী দিয়ে হেরে যাওয়াটা কাম্য ছিল না ঠিকই। কিন্তু এর সঙ্গে ২০১৯-এর ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। সেখানে বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেই দাবি করছে তৃণমূল।