মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের নয় পরিযায়ী শ্রমিককে জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছে ছত্তীসগঢ় পুলিশ। কিন্তু তাঁদের বাধ্য করা হয়েছে সেই রাজ্য ছাড়তে। এমনই অভিযোগ করে আবার বিজেপিশাসিত রাজ্যকে নিশানা করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তাঁর অভিযোগ, ছত্তীসগঢ় পুলিশ যা করেছে, তা সংবিধান-বিরোধী। মৌলিক অধিকার হরণের শামিল।
মঙ্গলবার সকালে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন মহুয়া। ক্যাপশনে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়, ছত্তীসগড় পুলিশ এবং কোন্ডাগাঁও জেলা পুলিশের এক্স হ্যান্ডলকে উদ্ধৃত করে তৃণমূল সাংসদ লেখেন, ‘‘মনোযোগ দিন। আপনারা আমাদের কর্মীদের জোর করে বাসে তুলে ফেরত পাঠাচ্ছেন (বাংলায়)! অবাধ যাতায়াতের অধিকার বন্ধ করার কোনও অধিকার আপনাদের নেই।’’ মহুয়ার দাবি, মৌলিক অধিকারের ১৯ (১) (ডি) এবং (জি) হরণ করছে ছত্তীসগঢ় পুলিশ।
বস্তুত, তাঁর লোকসভাকেন্দ্র এলাকার নয় বাসিন্দাকে জোর করে ছত্তীসগঢ় পুলিশ জেলে ঢুকিয়েছে বলে মঙ্গলবার রাতে অভিযোগ করেন মহুয়া। তিনি জানান, মিথ্যা মামলায় কৃষ্ণনগরের নয় পরিযায়ী শ্রমিককে জেলবন্দি করা হয়েছে। এটা ছত্তীসগঢ় সরকার এবং পুলিশ পরিচালিত অপহরণ। বুধবার মহুয়া জানিয়েছেন, তিনি খবর পেয়েছেন ওই ন’জনকেই ছেড়ে দিয়েছে ছত্তীসগঢ় পুলিশ। কিন্তু এ বার তাঁদের বাধ্য করা হল সেই রাজ্য ছাড়তে।
ভিডিয়োবার্তায় মহুয়া বলেন, ‘‘যে নয় শ্রমিককে ছত্তীসগঢ় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, জেলে ভরেছিল,তাঁদের সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন তাঁদের জোর করে বাসে তুলে দিয়েছে পুলিশ। বাধ্য করা হয়েছে ছত্তীসগঢ় ছেড়ে বাংলায় চলে আসতে।’’ তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ, আইন-বহির্ভূত কাজ করছে বিজেপিশাসিত ছত্তীসগঢ়ের পুলিশ। দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি ছত্তীসগঢ়ের ডিজি-কে বলতে চাই, আপনি কি জানেন আপনার পুলিশ কী করছে? ওঁরা অপরাধী নন, ওঁরা কাজ করতে গিয়েছিলেন। এ ভাবে তাঁদের জোর করে বাসে ভরে পাঠিয়ে দেওয়া যায় না। তাঁদের অধিকার আছে দেশের যে কোনও রাজ্যে থাকার। সেই অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, গত বেশ কয়েক দিন ধরে অভিযোগ উঠছে, বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও বাংলা থেকে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন্রাজ্যে (বিশেষত বিজেপিশাসিত রাজ্যে) আটক করে রাখা হচ্ছে। বাংলাভাষী হলে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন্রাজ্যে হেনস্থার ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।