পওয়ারের জোটে এখনই নয় তৃণমূল

প্রজাতন্ত্র দিবসে মুম্বইয়ে পওয়ারের ডাকা ‘সংবিধান বাঁচাও’ আন্দোলনে অন্যান্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে যোগ দিয়েছিল তৃণমূলও। তার পরে আজ, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলিকে পওয়ার নয়াদিল্লিতে তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিল না তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৫
Share:

নরেন্দ্র মোদীকে গদিচ্যুত করতে বিরোধীদের একজোট করতে সক্রিয় হয়েছেন শরদ পওয়ার। তাতে এক পা এগিয়েও কিছুটা রাশ টানল তৃণমূল।

Advertisement

প্রজাতন্ত্র দিবসে মুম্বইয়ে পওয়ারের ডাকা ‘সংবিধান বাঁচাও’ আন্দোলনে অন্যান্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে যোগ দিয়েছিল তৃণমূলও। তার পরে আজ, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলিকে পওয়ার নয়াদিল্লিতে তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিল না তৃণমূল। তবে আগামিকাল বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্হা এবং শত্রুঘ্ন সিন্হার নেতৃত্বাধীন নতুন অরাজনৈতিক মঞ্চে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে।

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, তৃণমূলের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনের এখনও অনেক দেরি। এখনই তাড়াহুড়ো করে পওয়ারের হাত ধরার প্রাসঙ্গিকতা নেই। বিশেষত, এনসিপি নেতা পওয়ার মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে অনেকটাই বিজেপি-র দিকে ঝুঁকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা বিরোধীদের একাংশের। পওয়ারের বিজেপি-বিরোধী আন্দোলন মোদীর সঙ্গে দরকষাকষির অস্ত্র কিনা, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

Advertisement

বিরোধী ঐক্যের প্রশ্নে তাই পওয়ারের উপর ভরসা করতে নারাজ তৃণমূল নেত্রী। তৃণমূল নেতৃত্বের এটাও ধারণা, রাহুল গাঁধীর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে পওয়ার ইউপিএ-র পরবর্তী আহ্বায়ক হওয়ার পথ খোলা রাখতে চাইছেন। মমতা এত আগে থেকে এই সমীকরণে ঢুকতে নারাজ। তাঁর মতে, এত আগে থেকে জোড়াতালি দিয়ে কোনও জোট তৈরি না করে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করা হোক। ফলাফলই স্থির করে দেবে, বিরোধী জোটের রাশ কার হাতে থাকবে।

গত সংসদীয় অধিবেশন থেকেই মমতা নিজের মতো করে সরকার বিরোধিতার কৌশল নিয়েছেন। রাহুল গাঁধীর ছাতার তলায় এসে পরনির্ভরশীল হতে তিনি নিষেধ করেছেন দলের সাংসদদের। এর আগে সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বে যখন বিরোধী দলগুলি একজোট হয়, তখন মমতার প্রস্তাব ছিল, যে রাজ্যে যারা শক্তিশালী, সেখানে তাদের নেতৃত্বে বিজেপি-বিরোধী আন্দোলন হোক। কিন্তু রাহুল সেই পরামর্শ কার্যত উপেক্ষা করে গোটা আন্দোলনটিকেই তাঁর নেতৃত্বে নিয়ে এসেছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হন মমতা। তিনি চাইছেন, নিজের শক্তির জোরে কংগ্রেস নেতৃত্বকে কিছুটা শিক্ষা দিতে।

বড় কোনও জোটে সামিল না হলেও বিজেপি-বিরোধী মঞ্চগুলির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন মমতা। কালই তিনি দীনেশকে গুজরাতে পাঠিয়েছিলেন সেখানকার পাতিদার নেতা হার্দিক পটেলের সঙ্গে দেখা করতে। যশবন্ত সিন্হা এবং শত্রুঘ্ন সিন্হা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন মমতার সঙ্গে। আজ আপ-এর নতুন তিন রাজ্যসভার সাংসদকেও তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গেই ঘুরতে দেখা গেছে।

রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বিরোধী শিবিরে বিভাজন ঘটাতে সক্রিয় মোদী-শাহ। এই অবস্থায় মমতার পদক্ষেপে বিজেপির লাভই হতে পারে। একই ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা নিয়ে সীতারাম ইয়েচুরির মত প্রকাশ কারাট খারিজ করায় বিজেপিরই লাভ হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন