হরিয়ানার ছোট্ট গ্রাম, বিবিপুর। রাজ্যের আর পাঁচটা জনপদের মতো এত দিন সেখানেও দাগ কেটেছিল গভীর অনিশ্চয়তা। অর্থনীতিতে সুখসমৃদ্ধি যতই আসুক, সমাজের গভীরে লেখা থাকতো বিষাদ কাহিনি। কেন না, জন্ম নেওয়ার আগেই সেখানে লেখা হয়ে যেত একটি মেয়ের মৃত্যুর কথা। কন্যা ভ্রূণ হত্যায় হরিয়ানা পাল্লা দিত দেশের সব রাজ্যকে।
কিন্তু সেই গ্রামেই এখন সূচনা হয়েছে নতুন সামাজিক আন্দোলনের। সেলফি উইথ ডটার! শখের মোবাইল ফোনে নিজের মেয়ের সঙ্গে নিজস্বী তুলবেন বাবা। তার পর সে ছবি পোস্ট করবেন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে। গোটা পরিকল্পনাটি গ্রামের সরপঞ্চ সুনীল জগনের মস্তিষ্কপ্রসূত। নিজের মেয়ের সঙ্গে নিজস্বী তুলে টুইটারে পোস্ট করেছিলেন।
তার পরেই সোশ্যাল সাইটে গোটা বিষয়টি একেবারে হিট! রবিবার রেডিওতে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টেনে এনেছিলেন সেই প্রসঙ্গই। হরিয়ানার জমিতে জন্ম নেওয়া এই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে আহ্বান জানান মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরিয়ানার মতো রাজ্য, যেখানে কন্যা ভ্রূণ হত্যার ঘটনা আকছার ঘটত, সেখানেই এখন কন্যা সন্তানের প্রতি নজর দেওয়ার সামাজিক আন্দোলন শুরু হয়েছে। টেনে আনেন সেই সরপঞ্চের কথা। তাঁর এই ভাবনা এখন ঝড় তুলেছে, শুধু বাবারাই নয়, মায়েরাও এতে সামিল হচ্ছেন বলে জানান মোদী। শুধু ভারতে নয়, ‘সেলফি উইথ ডটার’ গোটা বিশ্বেই জনপ্রিয় হয়েছে বলে মনে করছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। পিএমও-র তরফে জানানো হয়েছে, ভারতে ‘সেলফি উইথ ডটার’ এখন টুইটারে সব থেকে জনপ্রিয়।
হরিয়ানার নিজস্বী আন্দোলনের মতো গোটা দেশেই ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ কর্মসূচিকে সামাজিক আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান মোদী। পাশাপাশি, দেশের মহিলাদের সামাজিক সুরক্ষার দিকেও বিশেষ ভাবে নজর দিতে চান প্রধানমন্ত্রী। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে দেশবাসীর উদ্দেশে মোদীর মন্তব্য, ‘‘যে মহিলারা বাড়ির কাজে সহযোগিতা করেন, কিংবা অন্য ক্ষেত্রে কাজ করেন, রাখিবন্ধনের আগেই তাদের কাছে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি পৌঁছে দিতে হবে।’’ বছরে ৩৩০ টাকা দিয়ে জীবনবিমা ও এক বছরে ১২ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে দুর্ঘটনা বিমার সরকারি প্রকল্পকে তুলে ধরে একে জনস্বার্থে ব্যবহারের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।