Demonetisation

উপহার নিতে এল না দু’বছরের খুদে, মঞ্চ থেকে ফিরে গেলেন অখিলেশ

ঘটনার সূত্রপাত দু’বছর আগে। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর আচমকাই নোটবন্দির ঘোষণা করে মোদী সরকার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:৪৩
Share:

এই ছোট্ট খাজাঞ্চি ও তার মাকেই নিজে হাতে উপহার দিতে চেয়েছিলেন অখিলেশ। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

ঢাল-তরোয়াল নিয়ে তৈরি যোদ্ধারা। অথচ দেখা নেই সেনাপতির। লজ্জায় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে এলেন রাজা। নোটবন্দি নিয়ে বিজেপিকে শায়েস্তা করতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতা হল উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের। তবে তফাত একটাই, এ ক্ষেত্রে সেনাপতি কোনও হোমরা চোমরা রাজনীতিক নন, বরং দু’বছরের এক খুদে। সে ভরা সভায় হাজিরা না দেওয়াতেই লজ্জায় মাথা কাটা গেল ‘রাজা’ অখিলেশের।

Advertisement

যদিও ঘটনার সূত্রপাত দু’বছর আগে। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর আচমকাই নোটবন্দির ঘোষণা করে মোদী সরকার। তাতে চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। এটিএম এবং ব্যাঙ্কের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রায় ১০০ জন প্রাণ হারান। কানপুর সে রকমই এক লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায়, ২ ডিসেম্বর পুত্রসন্তানের জন্ম দেন সর্বেশা নামের এক মহিলা। মোদী সরকারের সিদ্ধান্তে তখন ক্ষোভে ফুটছে গোটা দেশ। প্রতিবাদে সরব হয়েছে সমাজবাদী পার্টি-সহ বিরোধী দলগুলি। রাতারাতি তাদের ‘পোস্টার বয়’-এ পরিণত হয় খাজাঞ্চি নাথ নামের ওই সদ্যোজাত শিশুটি।

রবিবার দুইয়ে পা দিয়েছে সে। কিন্তু এই অল্প সময়েই অনেককিছু ঘটে গিয়েছে তার জীবনে। বাবা মারা গিয়েছিল জন্মের আগেই।শুরুতে বিধবা মায়ের সঙ্গে কানপুরের সর্দারপুর গ্রামে পৈতৃক বাড়িতেই ছিল সে। কিন্তু বিখ্যাত হওয়ার পর সেখান থেকে বিদায় নিতে হয়। কারণ চারদিক থেকে সাহায্য আসা শুরু হলে তাঁকে নিয়ে টানাটানি শুরু হয় দুই গ্রামের মধ্যে। তাঁকে নিয়ে কোনও প্রকল্পের কথা উঠলেই তাতে ভাগ চেয়ে বসে দুই গ্রামের লোকজন। তার উপর মালিকানা নিয়ে ঝামেলা শুরু হয় মা এবং বাবার পরিবারের মধ্যেও। এই মুহূর্তে আনন্দপুরে মামারবাড়ির আশ্রয়ে রয়েছে সে।

Advertisement

ছোট্ট খাজাঞ্চি ও তার মায়ের এই ছবিটি টুইট করেন অখিলেশ যাদব।

আরও পড়ুন: মেয়র হলেন ফিরহাদ, ভোট বয়কট বাম-কংগ্রেসের

আরও পড়ুন: ‘ভারত আমার পিতৃভূমি, পালাব না’, যোগীকে পাল্টা ওয়েইসির ​

কিন্তু অতশত খবর বোধহয় রাখতেন না সপা প্রধান। তাই গত সপ্তাহে দু’বছরের জন্মদিনে খা়জাঞ্চির হাতে দু’টি দু’কামরার ফ্ল্যাট তুলে দেবেন বলে ঘোষণা করেন তিনি। রবিবার সর্দারপুর গ্রামে সেইমতো আয়োজনও হয়েছিল। ফ্ল্যাটের চাবি নিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলেন অখিলেশ। কিন্তু শেষ মুহূ্র্তে বেঁকে বসেন সর্বেশা দেবী। সর্দারপুরে ঢুকলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে মেরে ফেলবে। তাই সাহায্য করতে হলে আনন্দপুরে এসেই করতে হবে বলে জানিয়ে দেন তিনি। অত লোকের সামনে কী বলবেন প্রথমে বুঝে উঠতে পারেননি অখিলেশ। পরে বলেন, ‘‘ওদের পারিবারিক ঝামেলার কথা জানব কী ভাবে?’’

মঞ্চে খাজাঞ্চি ও তার মায়ের হাতে উপহার তুলে দিতে পারেননি অখিলেশ। তবে পরে নাকি দলের তরফে তাঁদের হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেওয়া হয়েছে। সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধরি এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সর্দারপুর এবং আনন্দপুর, দুই গ্রামে দু’টি ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে। কোথায় থাকবেন, কোথায় থাকবেন না তা সর্বেশাদেবী-ই ঠিক করবেন। আমরা ওঁদের ব্যক্তিগত ঝামেলায় নাক গলাতে চাই না।’’ এর আগে দলের তরফে ওই ছোট্ট শিশুটিকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে সাহায্য করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement