—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লক্ষ্য, দ্রুত ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)। সেই উদ্দেশ্যে দেশের সবক’টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে (সিইও) নিয়ে দিল্লিতে বুধবার থেকে বৈঠকে বসল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার এবং দুই নির্বাচন কমিশনার, এসএস সান্ধু ও বিবেক যোশীর উপস্থিতিতে বৈঠক চলবে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত।
মঙ্গলবার চিঠি পাঠিয়ে নির্বাচন কমিশন সব সিইও-কে ভোটার তালিকায় এসআইআর সংক্রান্ত দু’দিনের এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। জানানো হয়েছিল, ভোটার তালিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সিইও এবং যুগ্ম সিইও-দেরও বৈঠকে সঙ্গে রাখতে হবে। কমিশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এসআইআর শুরুর আগে এটিই দ্বিতীয় তথা শেষ প্রস্তুতি বৈঠক। বিহারে এসআইআর-পর্ব শেষে বিধানসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এর পরে আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, কেরল, তামিলনাড়ু এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরিতে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। কমিশনের ওই সূত্রের দাবি, প্রথম দফায় ওই পাঁচটির পাশাপাশি দেশের আরও কিছু রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা হতে পারে।
বিহারে এসআইআর প্রক্রিয়ার সঙ্গে দেশের বাকি রাজ্যগুলিতে সেই কাজের পদ্ধতিতে কিছুটা ফারাক থাকারই কথা। আবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বাকি রাজ্যগুলিতে এসআইআরের প্রশ্নে নতুন কিছু পদ্ধতিগত প্রয়োগ করতে পারে কমিশন। পাশাপাশি, এসআইআর কার্যকরের জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির সহযোগিতারও প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই এসআইআর প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই পরিস্থিতিতে সংঘাত এড়িয়ে এসআইআর কার্যকরের লক্ষ্যেই সম্ভবত এমন বৈঠক ডাকা হয়েছে। যদিও এই বৈঠকের জন্য আলাদা করে কোনও রিপোর্ট সিইও-দের থেকে চায়নি কমিশন। ইতিমধ্যেই যে সব রিপোর্ট তাদের কাছে রয়েছে, তার ভিত্তিতেই বৈঠক হওয়ার কথা।
চলতি মাসের গোড়ায় সিইসি জ্ঞানেশ বলেছিলেন যে সমস্ত রাজ্যে ভোটার তালিকার এসআইআর প্রক্রিয়া চালু করার কাজ চলছে এবং এ সংক্রান্ত সময়সূচির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নেবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হতে পারে দু’দিনের এই বৈঠকে। এ রাজ্যে এখন সরকারি ছুটি চলছে। তা শেষ হবে ২৮ অক্টোবর। মনে করা হচ্ছে, তার পরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হতে পারে এসআইআর। তবে তার আগে, এই বৈঠকের পরেই এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর এসআইআর সংক্রান্ত প্রথম বৈঠকে সিইও-দের এসআইআর চালু করার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছিল কমিশন। সিইওদের বলা হয়েছিল রাজ্যের ভোটার তালিকা প্রস্তুত রাখতে।
বেশ কয়েকজন সিইও ইতিমধ্যেই তাঁদের ওয়েবসাইটে শেষ এসআইআরের পরে প্রকাশিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছেন। দিল্লির সিইও ২০০৮ সালের এবং উত্তরাখণ্ডের সিইও ২০০৬ সালের শেষ এসআইআর প্রকাশ করেছেন ওয়েবসাইটে। কমিশনের তরফে ডেপুটি ডিরেক্টর আর পবন একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, গত ১০ সেপ্টেম্বেরের বৈঠকের ‘ফলো আপ’ হল বুধবার থেকে শুরু হওয়া দু’দিনের এই বৈঠক। পুরনো এসআরআর প্রকাশ, পরবর্তী এসআইআর প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি পর্যালোচনার পাশাপাশি জেলা নির্বাচন আধিকারিক (ডিইও), নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক (ইআরও) এবং সহকারী নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক (এআরও) এবং বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)-দের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বুধবারের বৈঠকে।