গভীর নিম্নচাপের জেরে আন্দামানে বিপাকে পর্যটকরা।—ফাইল চিত্র।
সমুদ্রে গভীর নিম্নচাপের ফলে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। ওই নিম্নচাপের জন্য ভারত মহাসাগরের বুকে হ্যাভলক আইল্যান্ডের আবহাওয়া এখন যথেষ্টই খারাপ। তার জেরে আটকে পড়েছেন দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক। যাঁদের মধ্যে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার থেকে বেড়াতে যাওয়া বাঙালির সংখ্যাই প্রায় ১২০০।
তবে শনিবার খানিকটা হলেও আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে খুব শীঘ্রই নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারবেন তাঁরা।
শুক্রবার কিছু ক্ষণের জন্য থেমেছিল ঝড়ের তাণ্ডব। সেই সময় জাহাজ পাঠিয়ে হ্যাভলক আইল্যান্ড থেকে প্রায় আড়াইশো পর্যটককে উদ্ধার করে আন্দামান প্রশাসন। হেলিকপ্টার নামানোরও চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে সম্ভব হয়নি। আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করলে মাঝ সমুদ্র থেকে ফিরেও যায় একটি জাহাজ। বাড়ি ফিরতে রবিবারের বিমান টিকিট বুক করে রেখেছিলেন অনেকে। তাঁদের কথা ভেবে শনিবার সকালেও পোর্টব্লেয়ার থেকে একটি জাহাজ ছাড়ে। কিন্তু ঠিক কত জনকে উদ্ধার করা গিয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে খুনের ছক, মহারাষ্ট্রের লস্কর জঙ্গিকে ফাঁসির সাজা দিল বনগাঁ আদালত
এ দিকে হোটেল এবং রিসর্টে থাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অনেক পর্যটক। নতুন করে ‘বুক’ করতে গেলেও ঘর মেলেনি। তাই তাঁদের অনেকেই খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৮০ শতাংশই বাঙালি পর্যটক বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। চড়া দামে খাবার ও পানীয় কিনে খেতে হচ্ছে তাঁদের। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে কোনও সাহায্য মেলেনি বলেও অভিযোগ।
এই দুর্যোগে হ্যাভলক আইল্যান্ডে আটকে পড়েছেন বাংলার অনিন্দিতা সরকার। এ দিন ফোনে তিনি বলেন, ‘‘গত তিন দিন থেকে ঝড় ও খারাপ আবওহাওয়া। যার ফলে বাড়ি ফিরতে পারিনি। বিমানের টিকিট কাটা ছিল আগে থেকে। শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করতে হয়েছে।’’ অরুপ মল্লিক নামে আর এক জন পর্যটকের কথায়, ‘‘আটকে থাকা পর্যটকদের মধ্যে ৮০ শতাংশই বাঙালি। অনেক বিদেশি পর্যটকও রয়েছেন। নির্দিষ্ট দামের চেয়ে ১৫-২০ টাকা বেশি দিয়ে পানীয় জল কিনতে হচ্ছে।’’ নিরাপদে বাড়ি ফিরতে, রাজ্য সরকারের কাছে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ‘রাফাল রায়ে সিএজি নিয়ে ভুল তথ্য শুধরে নিন’, সু্প্রিম কোর্টকে অনুরোধ কেন্দ্রের
এ ব্যাপারে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘আন্দামান প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি আমরা। পোর্টব্লেয়ারের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। পর্যটকদের সুস্থ অবস্থায় দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’