ছেলে আসছে দুন এক্সপ্রেসে। তাকে আনতে কল্যাণী থেকে সাত সকালে হাওড়ায় এসেছিলেন স্বপন মিত্র। ট্রেনটি হাওড়ায় আসার কথা ছিল সকাল ৭টায়। কিন্তু এল দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে। ৭ ঘণ্টা ধরে বার বার ছুটে গিয়েছেন ‘এনকোয়্যারি’তে। তার পরেও কিছুতেই সঠিক ভাবে জানতে পারেননি কেন আসতে এত দেরি হচ্ছে দুন এক্সপ্রেসের।
শুধু স্বপনবাবুই নয়, একই অবস্থা কালকা মেল, যোধপুর এক্সপ্রেস-সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের যাত্রীদের স্বজনদের। কিন্তু ট্রেনগুলি কেন যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেরি করে আসছে, জানতে পারেননি কেউই।
হাওড়া স্টেশনে অপেক্ষায় থাকা স্বজনদের যখন এই অবস্থা তখন যাত্রীদের অবস্থা আরও করুণ। ট্রেনের কেন দেরি হচ্ছে, তা জানতে ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক থেকে শুরু করে রেলের কর্মী, এমনকী বিভিন্ন স্টেশনের কেটারিংয়ের কর্মীদের কাছেও যাত্রীরা বার বার প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু কোনও উত্তর পাননি।কিন্তু কেন এই দেরি? রেল সূত্রের খবর, বিহারের শোননগরের কাছে শোন নদীর উপরে নবনির্মিত সেতুর ওপর রেল লাইনে ইন্টারলকিং সিস্টেমের কাজ চলছে। গত ১৫ অক্টোবর থেকে ওই কাজ শুরু হয়েছে। চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। সে কারণে বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। ঘুর পথে চালানো হচ্ছে অনেক ট্রেন। এই বিরাট কর্মকাণ্ডে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হবে পাঁচ দিন।
রেলপথে কলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার দুটি রুট। একটি আসানসোল-ঝাঁঝা-পটনা-মুঘলসরাই হয়ে দিল্লি মেন লাইন। অন্যটি আসানসোল-ধানবাদ-গয়া-মুঘলসরাই হয়ে গ্র্যান্ড কর্ড। গত দু’দিন ধরে গ্র্যান্ড কর্ড রুটের অনেক ট্রেনই বাতিল হয়েছে। কিছু ট্রেনকে মেন লাইনে চালানো হচ্ছে।
পূর্ব মধ্য রেল সূত্রের খবর, ওই সেতুর কাজের জন্য ওই রেলে মোট ১১টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ৬টি ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ঘুরপথে চালানো হচ্ছে আরও ১০টি ট্রেন। পাশাপাশি পূর্ব রেল জানিয়েছে, ওই কাজের জন্য হাওড়া, শিয়ালদহ ও কলকাতা থেকে ৩টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সেগুলি হল কলকাতা জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস, হাওড়া-গ্বালিয়র এক্সপ্রেস, এবং হাওড়া-মথুরা চম্বল এক্সপ্রেস। ঘুরপথে চলছে হাওড়া মুম্বই মেল ভায়া ইলাহাবাদ,হাওড়া যোধপুর এক্সপ্রেস, হাওড়া-দেহরাদূন এক্সপ্রেস, হাওড়া কালকা মেল, হাওড়া-ইনদওর শিপ্রা এক্সপ্রেস এবং শিয়ালহ অজমেঢ় এক্সপ্রেস। পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এই কাজের খবর দিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের দাবি, রেল বিজ্ঞাপন দিয়েই দায় সেরেছে।