মেয়ের সঙ্গে শুমায়ালা জাভেদ। ছবি: সংগৃহীত।
সাত বারের জাতীয় নেটবল চ্যাম্পিয়ন তিনি। তাঁর ‘অপরাধ’, কন্যাসন্তানের মা হওয়া। তাই তাঁকে তিন তালাক দিয়ে বিয়ে ভাঙলেন স্বামী। ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারস্থ হয়েছেন নেটবল খেলোয়াড় শুমায়ালা জাভেদ।
রবিবার সংবাদমাধ্যমে শুমায়ালা জানিয়েছেন, গত ২০১৪-র ৯ ফেব্রুয়ারি লখনউ-এর গোঁসাইগঞ্জ এলাকার আজম আব্বাসির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। তাঁর দাবি, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার চালাতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই শারীরিক ও মানসিক ভাবে আমার উপর নির্যাতন চালাতেন ওঁরা। যখন তখন বাবার কাছে পণের টাকাও চাইতেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।”
আরও পড়ুন
বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের নিরাপত্তার বহরে কাটছাঁট করলেন যোগী
নিজের ট্রফির মাঝে শুমায়ালা জাভেদ। ছবি: সংগৃহীত।
অত্যাচারের হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে বেশ কয়েক বার মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে শ্বশুরবাড়ির চাহিদাও মিটিয়েছেন তাঁর বাবা। শুমায়ালার দাবি, “২০১৪-র জুনেই শ্বশুরবাড়িতে ২ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন আমার বাবা। সে সময় বেশ ভালই ব্যবহার করত ওঁরা।” তবে এর কিছু দিন পরেই শুমায়ালার উপর ফের অত্যাচার শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ, “এক বার আমাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টাও করেন আমার ননদ। সে বছর সেপ্টেম্বরেই ১ লক্ষ টাকা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করেন বাবা।” তবে তাতেও অত্যাচার কমেনি। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরও সে ছবিটা বদলায়নি। শুমায়ালা বলেন, “কন্যাসন্তান না হলে আমাকে তার ফল ভোগ করতে হবে বলেও শাসাতে থাকেন তাঁরা।” এমনকী, বেআইনি হলেও সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণের পরীক্ষা করানো হয়। কন্যসন্তান হবে জেনে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা শুমায়ালাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শেষমেশ আমরোহায় বাপের বাড়িতে চলে আসেন তিনি। সেখানেই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শুমায়ালা। তার পর তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেন তাঁর বাবা। কিন্তু, চলতি মাসে তাঁকে তিন তালাক দেন শুমায়ালার স্বামী।
শুমায়ালা জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুবিচার চাই আমি। যাঁরা স্ত্রীকে তিন তালাক দেন তাঁদের বিরুদ্ধে যাতে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীকে সেই অনুরোধ করব।”