তিন তালাক: চুপ তৃণমূল, কারণ কি সংখ্যালঘু ভোট?

কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টার আলোচনায় বক্তার নামই ঠিক করে উঠতে পারল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল!  অংশ নিল না আলোচনাতেও। এমনকী ভোটাভুটিতেও অংশ নিল না তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:১৯
Share:

লোকসভায় তখন চলছে তিন তালাক বিতর্ক।

Advertisement

সেই আলোচনায় তৃণমূল কোথায়!

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়-সহ লোকসভার প্রায় গোটা দলই তখন সংসদীয় অফিসে তুমুল আড্ডায় মজে। সঙ্গে কফি আর ক্রিসমাস কেক।

Advertisement

আপনারা যাবেন না? সাংবাদিকের প্রশ্নে কিছুটা হাল্কা মেজাজে এক প্রবীণ সাংসদ (যিনি দিল্লির দূষণ থেকে কেজি বেসিনে তেল-গ্যাস উত্তোলন— সব বিষয়েই সংসদে সরব হন) বললেন, ‘‘এ সব নিয়ে চট করে কিছু বলা যায় নাকি! কে কাকে শাদি করছে, কে কাকে তালাক দিচ্ছে! এ সব ভারি গোলমেলে ব্যাপার।’’ আর এক সাংসদ বললেন, ‘‘এ নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কে বলবেন, তা ঠিক করা হচ্ছে।’’ কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টার আলোচনায় বক্তার নামই ঠিক করে উঠতে পারল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল! অংশ নিল না আলোচনাতেও। এমনকী ভোটাভুটিতেও অংশ নিল না তারা।

কেন এ ভাবে চুপ রইল তৃণমূল? সূত্রের বক্তব্য, দলের সাংসদদের মমতার নির্দেশ ছিল, এই বিলের বিরোধিতা না করলেও সপক্ষে কিছু বলা হবে না। কারণ পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোটের বাধ্যবাধকতা রয়েছে দলের। রাজ্যের সংখ্যালঘুদের একটি বড় অংশ মনে করেন, তিন তালাকের অপব্যবহার হয় এটা যেমন ঠিক, তেমনই মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকারের উপরে আদালত নির্দেশ চাপিয়ে দিতে পারে না।

সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে তিন তালাক প্রশ্নে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে চিড় ধরুক, চাইছেন না মমতা। এই বিল সমর্থন করলে মুসলিমদের একাংশের রোষের মুখে প়ড়তে হবে। আর বিরোধিতা করলে মুসলিম মহিলা, প্রগতিশীল সংখ্যালঘু সমাজ ও ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দুরা রুষ্ট হতে পারেন। তাই এই অবস্থান।

তৃণমূলের এই অবস্থানকে বিঁধে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘কেউ যাতে না চটে, তাই মুখ বন্ধ রেখেছে তৃণমূল। দিল্লিতে তিন তালাক চলছে আর মুখ্যমন্ত্রী পরিকল্পিত ভাবে কপিল মুনির আশ্রমে চলে গিয়েছেন!’’ অধীরের নিজের দল অবশ্য আলোচনায় অংশ নিলেও তৃণমূলের মতোই ভোটাভুটিতে যায়নি। সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘‘বিজেপির একটিই ব্র্যান্ড— হিন্দুত্ব। তৃণমূলের বহু ব্র্যান্ড! যখন যেমন তখন তেমন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন