নিজের রাজ্যে গত বিধানসভা অধিবেশনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেসের হাত ধরতে তিনি অনিচ্ছুক। সংসদেও দলকে একলা চলার নির্দেশ দিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব রাখার বাতাবরণ তৈরি করছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু এ রাজ্যে কংগ্রেস-সঙ্গ ত্যাগ করলেও ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটের মুখে কংগ্রেসেরই হাত ধরতে চেষ্টা করছে তৃণমূল!
তৃণমূলে তাঁর ইনিংসের একেবারে শেষ দিকে মুকুল রায় ত্রিপুরার দায়িত্ব ছাড়ার পরে সেখানে দলের তরফে পর্যবেক্ষক হয়েছেন বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। তিনিই সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘যোগাযোগ’ বাড়াচ্ছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। তাদের সঙ্গে জোট করেই তৃণমূল বিধানসভা ভোটে লড়ার প্রস্তাব দিয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। যদিও সব্যসাচীর বক্তব্য, ‘‘ত্রিপুরার কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা গোপাল রায় এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। দেখা যাক কী হয়!’’
মুকুল-জমানায় ত্রিপুরায় কংগ্রেস ভেঙেই তৃণমূল তৈরি হয়েছিল। একের পর এক বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য তৃণমূলে মোহভঙ্গ হওয়ায় সেই বিধায়কেরা বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছেন। ফলে, এখন ত্রিপুরায় তৃণমূলের সংগঠন সে অর্থে নেই বললেই চলে। সেই কারণেই কংগ্রেসের হাত ধরার চেষ্টা বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মত। কংগ্রেস থেকে আসা বিধায়কদের তৃণমূল ছাড়ার ব্যাপারে সব্যসাচী অবশ্য মন্তব্য করেছেন, ‘‘ওরা তো সব আয়ারাম-গয়ারাম!’’
বিজেপি-র আগে তৃণমূলই যে হেতু কংগ্রেসকে ভাঙিয়েছিল, তাই মমতার দলের সঙ্গে এখন সমঝোতার পক্ষপাতী নন ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বীরজিৎ সিংহ। তাঁরা বিষয়টি এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক ও সহ-পর্যবেক্ষকদের জানাচ্ছেন। ইতিমধ্যে বিজয় রাঙ্খলের আইএনপিটি এবং আইপিএফটি-র বিক্ষুব্ধ একটি অংশ-সহ পাঁচটি সংগঠন কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে ত্রিপুরায় বিজেপি ও বাম-বিরোধী তৃতীয় ফ্রন্ট গড়তে তৎপর হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভোট বিভাজন কমাতে তৃণমূলকেও ওই ফ্রন্টের শরিক করা হবে কি না, সিদ্ধান্ত নিতে হবে কংগ্রেসকে।