তৃণমূলের প্রার্থীকে ভোট দিলে দলবদল প্রমাণিত হয়ে যাবে! আবার কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠালে সেই তথ্যও বেরিয়ে গিয়ে কংগ্রেসের জন্য পরে হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে! তাই কংগ্রেস ছেড়ে আসা ১০ জন বিধায়ককে নিয়ে ভেবেচিন্তে পা ফেলতে হচ্ছে তৃণমূলকে।
আপাতত ঠিক হয়েছে, দল বদল করা ১০ বিধায়ককে রাজ্যসভায় কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে ভোট দিতে বলা হবে। নির্দেশ যাবে মৌখিক ভাবেই। তবে ভোটের দিন অঙ্ক বুঝে নিয়ে তাঁদের ভোটদানে বিরত রাখার ভাবনাও আছে শাসক শিবিরে। সেই সিদ্ধান্ত ছেড়ে রাখা হচ্ছে শেষ মুহূর্তের জন্যই। সিপিএম অবশ্য ছেড়ে যাওয়া দুই বিধায়ককে তালিকায় রাখছে না।
বিজেপির তিন বিধায়ক রাজ্যসভায় কাউকে ভোট দেবেন না। হিসেব মতো, ৫ আসনে প্রার্থীপিছু ৪৯টি করে ভোট দরকার জয়ের জন্য। তবে সাধারণ নিয়মে ৬ প্রার্থীর মধ্যে যিনি সব চেয়ে কম ভোট পাবেন, তাঁকে বাদ দিয়ে বাকি ৫ জন নির্বাচিত হবেন। তখন আর ৪৯-এর ধরাবাঁধা হিসেব লাগবে না। মহেশতলার কস্তুরী দাসের মৃত্যুর পরে তৃণমূলের হাতে এখন ২১২ জন বিধায়ক। নিজেদের চার প্রার্থীকে প্রয়োজনের চেয়েও অতিরিক্ত ভোট দিয়ে যে ক’টি বাড়তি থাকবে, তা কংগ্রেস প্রার্থীকে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে তৃণমূল।
রাজ্যসভায় বিধায়কদের ভোট দিতে হবে বিধানসভা কক্ষের মধ্যে দলের প্রার্থীকে দেখিয়ে। তাই ‘ক্রস ভোটিং’ করতে গেলে তাঁরাই করবেন, যাঁরা বিদ্রোহ করবেন বলে মনস্থ করেছেন! যেমন, ২০১৪ সালে তৃণমূলের রাজ্যসভা প্রার্থী আহমেদ হাসান ইমরানকে জেতানোর জন্য বাম ও কংগ্রেস থেকে যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, পরে তাঁরা আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। এ বার তৃণমূল নেতৃত্ব কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য ‘বিশ্বস্ত ও ওজনদার’ এমন ৮-৯ জনকে বেছে রাখতে চাইছেন, যাঁদের ‘ভুলচুক’ করে ভোট বাতিল করে ফেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
দলের কোন বিধায়ক কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন, তার তালিকা তৈরি করতে মঙ্গলবার বিধানসভায় পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের সঙ্গেও পার্থবাবুর কথা হয়েছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তিন বিধায়ক তৃণমূলকে সমর্থন করবেন বলে বিনয় তামাঙ্গ চিঠি দিয়ে পার্থবাবুদের জানিয়েছেন।