কাশ্মীর-বিতর্কে পাশে নেই তুরস্ক

পাকিস্তান প্রশ্নে কণিষ্কের দেশকে পাশে পাওয়া যাবে, এমনই প্রত্যাশা ছিল ভারতের। কিন্তু তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এর্দোগানের দু’দিনের ভারত সফরের পরে সে আশায় ছাই পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০৩:৩৬
Share:

পাকিস্তান প্রশ্নে কণিষ্কের দেশকে পাশে পাওয়া যাবে, এমনই প্রত্যাশা ছিল ভারতের। কিন্তু তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এর্দোগানের দু’দিনের ভারত সফরের পরে সে আশায় ছাই পড়েছে। বাণিজ্যিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ভারত ও তুরস্কের মধ্যে কিছু নতুন পদক্ষেপের কথা বলা হলেও, কৌশলগত সহযোগিতায় যোজন মাইল দূরেই রইল দু’দেশ। তুরস্ক জানিয়ে দিয়েছে, পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী বা এনএসজি-তে ভারতের সঙ্গে তারা চায় পাকিস্তানকেও। কাশ্মীর প্রশ্নেও ভারতীয় অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে এর্দোগান জানান, বহুস্তরীয় আলোচনাই মনপসন্দ তাঁদের। ভারতে আসার আগেই এক সাক্ষাৎকারে এর্দোগান জানিয়েছিলেন, কাশ্মীরে আর রক্তপাত হতে দেওয়া যাবে না। এ নিয়ে বহুপাক্ষিক আলোচনায় তুরস্ক অংশ নিতেই পারে।

Advertisement

এক কথায়, ইউরোপের ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা এই দেশটি যে পাকিস্তানের প্রতি নেকনজর ত্যাগ করবে না তা নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে এই মনোভাব কাঁটা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে সাউথ ব্লক। এর্দোগান কাশ্মীর প্রশ্নে কার্যত ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়ানোর পরেই নয়া বিবৃতি দিয়েছে পাক বিদেশ মন্ত্রক। তুরস্কের নাম না নিয়েই তারা জানিয়েছে, ‘‘কাশ্মীর সমস্যাকে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের সঙ্গে এক করে দেখাতে চায় দিল্লি। বিশ্ব জনমত ভারতের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে।’’

এটা ঘটনা যে ঠান্ডা যুদ্ধের সময় থেকেই পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ তুরস্কের। রাষ্ট্রপুঞ্জে কাশ্মীর সংক্রান্ত প্রস্তাবে তুরস্ক একাধিক বার ভারতের বিরুদ্ধে ভোটও দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাণিজ্যনির্ভর বিদেশনীতিতে ভারতকে পাশে পাওয়াটাও তুরস্কের কাছে জরুরি বলে মনে করছে দিল্লি। বস্তুত মধ্য এশিয়ায় বাণিজ্য বাড়ানোর জন্যই ভারত-পাক সুসম্পর্ক চায় তুরস্ক। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘আশা করছি এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিস্তারের সঙ্গে কৌশলগত যে দূরত্ব রয়েছে তা আমরা কমাতে পারব।’’ সূত্রের খবর, ভারত কাশ্মীর নিয়ে যে কোনও মধ্যস্থতা বরদাস্ত করবে না তা-ও জানানো হয়েছে এর্দোগানকে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতের এই অবস্থান এর্দোগানের অজানা নয়। জেনে বুঝেই যা বলার বলেছেন তিনি।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে ভারত তুরস্কের সঙ্গে কুর্দ তাস খেলে কি না, তা দেখতে চাইছেন কূটনীতিকরা। কুর্দদের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই লড়াই চলছে তুর্কি সরকারের। কড়া হাতে দমন করতে গিয়ে বিশ্বের সমালোচনার মুখে পড়েছে তুরস্ক। এই সমস্যার সমাধানে তুরস্ক কী করছে — এই মর্মে ইতিমধ্যেই খোঁচা দিয়েছে নয়াদিল্লি। জবাবে এর্দোগান বলেছেন, ‘‘দুটো সম্পূর্ণ পৃথক সমস্যা। কাশ্মীর আর কুর্দ সঙ্কট এক করে ফেলা ঠিক হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement