প্রতীকী ছবি।
পুরীর সেই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে শনিবার। তাঁর গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল দিন কয়েক আগেই। তার পর থেকেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চলছিল। ৭৫ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ হয়ে যাওয়া সেই কিশোরীকে প্রথমে ভুবনেশ্বর এমসে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় দিল্লি এমসে স্থানান্তর করানো হয়। দু’সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা চলার পর শনিবার মৃত্যু হয়েছে তার।
কিন্তু কিশোরীর মৃত্যুর পরই এই ঘটনা নয়া মোড় নিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছিল, তিন জন কিশোরীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। কিন্তু সেই পুলিশই এখন দাবি করছে, এই ঘটনায় কেউ জড়িত ছিলেন না। এমনকি, কিশোরীর বাবাও দাবি করা শুরু করেছেন যে, কেউ গায়ে আগুন ধরিয়ে দেননি তাঁর কন্যার। সে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। আর সেই অবসাদের কারণেই আত্মঘাতী হয়েছে।
গত ১৯ জুলাই কিশোরীকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তার পর তাকে ভুবনেশ্বর হয়ে দিল্লি এমসে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারি সব রকম সহযোগিতার পরেও বাঁচানো যায়নি কিশোরীকে। কিশোরীর মৃত্যুর খবর মুখ্যমন্ত্রী জানানোর কয়েক মিনিট পরেই পুলিশের তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে দাবি করা হয়, এই অগ্নিদগ্ধের মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছোনো গিয়েছে। পুলিশের দাবি, এখনও পর্যন্ত তদন্তে যা উঠে এসেছে সেটি হল, এই ঘটনায় অন্য কোনও ব্যক্তি জড়িত ছিলেন না। তবে কেন, কী ভাবে কিশোরীর গায়ে আগুন লাগল, সেই কারণ অবশ্য ব্যাখ্যা করেনি পুলিশ। তবে তারা বলেছে, ‘‘সকলের কাছে অনুরোধ এই ঘটনা নিয়ে কোনও অবান্তর মন্তব্য করবেন না।’’
কিশোরীর বাবা এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি না করার আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যে মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে আমার মেয়েটি, দয়া করে ওর মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করবেন না।’’
ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১৯ জুলাই। প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ ওঠে, তিন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী তার রাস্তা আটকেছিল। কিছু ক্ষণ তর্কাতর্কি হওয়ার পরে ওই দুষ্কৃতীরাই তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তবে পরে সংবাদপত্র ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানায়, অগ্নিদগ্ধ ওই কিশোরী নাকি বয়ান বদল করেছে। পুলিশের ওই সূত্রের দাবি, কিশোরী আগের বয়ান প্রত্যাহার করেছে। নাবালিকা জানিয়েছে, সে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত ছিল। সেই কারণেই তিন হামলাকারীর গল্প ফেঁদেছিল। তবে যে অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছিল, তাতে সে নিজেই নিজের গায়ে আগুন ধরিয়েছিল, এমনটা অনুমান করা কঠিন। কারণ, তার হাত বাঁধা ছিল। মুখে কাপড় গোঁজা ছিল। সেই অবস্থাতেই জ্বলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল কিশোরীকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, নাবালিকার সারা শরীর তখন আগুনে জ্বলছে। চিৎকারও করতে পারছিল না মেয়েটি। ওই অবস্থায় রাস্তা দিয়ে ছুটে যাচ্ছিল সে। স্থানীয়েরা যখন তাকে উদ্ধার করে আগুন নেবায়, তখন কোনও ক্রমে মেয়েটি জানিয়েছিল, তিন জন তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।