আক্রান্ত: জম্মুর রাজৌরিতে পাক সেনার গোলায় আহত মহিলা। শনিবার। ছবি: এএফপি।
একটানা তিন দিন। গুলিগোলার বিরাম নেই নিয়ন্ত্রণরেখায়। আজ জম্মুর রাজৌরির নৌশেরা বেল্টে পাক সেনার গুলি ও মর্টারে প্রাণ গেল দু’জন নিরীহ মানুষের। আহত অন্তত ৩ জন।
গত বৃহস্পতিবার থেকে এই নিয়ে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক হামলায় মারা গেলেন তিন জন সাধারণ মানুষ। ১১ মে মধ্যরাতে এই নৌশেরাতেই মর্টারের আঘাতে নিহত হয়েছিলেন ৩৫ বছরের এক মহিলা। আহত হয়েছিলেন তাঁর স্বামী। তার উপরে গত কাল সীমান্তে পাক রেঞ্জার্সের গুলিতে আহত হন বিএসএফের
এক জওয়ান। জম্মুতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের জনসংযোগ আধিকারিক মণীশ মেটা বলেন, ‘‘ভারতীয় সেনা এর যোগ্য জবাব দিচ্ছে।’’ নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর রাজৌরির সমস্ত স্কুল আজ থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ গুলি চালানো শুরু করে পাক সেনা। মণীশ জানান, ছোট আগ্নেয়াস্ত্র ও স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের বুলেট, সেই সঙ্গে ৮২ মিমি এবং ১২০ মিমি মর্টার শেল ছুটে আসতে থাকে পাকিস্তানের দিক থেকে। নিশানা ছিল নিয়ন্ত্রণরেখা ঘেঁষা পাঁচ-ছ’টি ছোট জনপদ— শেরি মাকেরি, নমকডালি, জানগড়, লাম, ভবানী এবং খাম্বা। গুলিগোলায় সব ক’টিই যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের রাজৌরির ডিসি শাহিদ ইকবাল চৌধুরি জানান, নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া এলাকার গ্রামবাসীদের অন্যত্র সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। রাজৌরির মতো পুঞ্চের বালাকোট সেক্টরেও সমস্ত স্কুল অনির্দিষ্ট কাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাইরে বেরোতে বারণ করা হয়েছে গ্রামবাসীদের।
আরও পড়ুন:মোদী-নওয়াজ বৈঠকের আশা
নিয়ন্ত্রণরেখায় দু’জন ভারতীয় সেনার মুণ্ডচ্ছেদের পরে এই সংঘর্ষবিরতির জেরে আরও উত্তাপ বাড়ল দু’দেশের। ক’দিন আগেই সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত সতর্ক করেছিলেন, বরফ গলতে শুরু করায় গ্রীষ্মে বাড়তে পারে জঙ্গি অনুপ্রবেশ। এপ্রিলে কেন্দ্র জানিয়েছিল, গত এক বছরে অন্তত ২৬৮ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাক সেনা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, জঙ্গি ঢোকানোর সময়েই এ ভাবে গোলাগুলি ছুড়ে তাদের ‘কভার’ দেয় পাক সেনা। আজ পুলওয়ামার ত্রালে নিরাপত্তা বাহিনীর টহলদারি দলের উপরে গুলি চালায় জঙ্গিরা। কেউ হতাহত না হলেও জারি রয়েছে তল্লাশি অভিযান।
বিয়েবাড়ি থেকে জঙ্গিদের হাতে অপহৃত ও খুন হওয়া কাশ্মীরি সেনা অফিসার উমর ফয়েজের পরিবারের সঙ্গে আজ দেখা করেন সেনাবাহিনীর ভিক্টর ফোর্সের জেনারেল অফিসার কম্যান্ডিং বি এস রাজু। তিনি বলেন, দক্ষিণ কাশ্মীরে সক্রিয় রয়েছে একশোর বেশি জঙ্গি। অধিকাংশই স্থানীয়। জঙ্গল এলাকা হওয়ায় জঙ্গিরা একটু সুবিধে পেলেও তাদের কব্জা করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ওই সেনা-কর্তা।