(বাঁ দিকে) মৃত তরুণ ঋষল সিংহ। (ডান দিকে) ধৃত দুই অভিযুক্ত। ছবি: সংগৃহীত।
বাবা দিনমজুর। পাঁচ ভাইবোন। তিন দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ভাই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। মা-বাবা এবং ভাইয়ের সঙ্গেই দিল্লির রোহিণী এলাকায় থাকতেন বছর উনিশের ঋষল সিংহ। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছিলেন। সংসার টানতে দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন নিজের কাঁধে। রোজ সকাল হলেই সাইকেলে করে খবরের কাগজ বিলি করতে বেরোতেন ঋষল। মাসে ১০ হাজার টাকা আয় হত। সেই টাকা দিয়েই সংসার এবং নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতেন তিনি।
এক জন সফল এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন ঋষল। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় ১ মার্চের সকালে। সিংহ পরিবারে নেমে আসে বিষাদের পাহাড়। ওই দিন সকালে প্রতি দিনের মতো সাইকেলে করে খবরের কাগজ বিলি করতে বেরিয়েছিলেন ঋষল। রোহিণীর কেএন কাটজু মার্গের কাছে একটি বেপরোয়া গাড়ি তাঁর সাইকেলে ধাক্কা মারে। এতটাই গতি ছিল যে ধাক্কার জেরে ঋষল গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনে আছড়ে পড়ে বনেটে আটকে যান। তাঁর সাইকেল গাড়ির সামনে আটকে যায়। ওই অবস্থাতেই চালক গাড়ি চালিয়ে যান। কিছুদূর যাওয়ার পর ঋষলের দেহ গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর।
সেই ঘটনার এক সপ্তাহ পর গাড়ির দুই আরোহী পঙ্কজ গুপ্ত এবং তাঁর ভাইপো সৌরভকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার দিন সকাল ৬টার সময় কাশ্মীরি গেটের কাছে একটি মন্দির থেকে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন পঙ্কজ এবং সৌরভ। গাড়ি চালাচ্ছিলেন সৌরভ। সেই সময় কেএন কাটজু মার্গের কাছে ঋষলকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যান তাঁরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ১৫০টি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে হরিয়ানার পানীপত থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।