আক্রমণেই উদ্ধব, ‘একলা চলো’ শাহের

নরেন্দ্র মোদীকে তীক্ষ্ণ ভাষায় আক্রমণ, আর সেই সঙ্গেই প্রশংসা রাহুল গাঁধীর। শরিক শিবসেনার মতিগতিতে হতাশ বিজেপি একলা চলার রাস্তা খুঁজছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৪:১৬
Share:

উদ্ধব ঠাকরে

নরেন্দ্র মোদীকে তীক্ষ্ণ ভাষায় আক্রমণ, আর সেই সঙ্গেই প্রশংসা রাহুল গাঁধীর। শরিক শিবসেনার মতিগতিতে হতাশ বিজেপি একলা চলার রাস্তা খুঁজছে।

Advertisement

লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটির আগে উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে ফোনে কথা বলে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছিলেন অমিত শাহ। ঘরোয়া মহলে জনে জনে জানিয়েছেন, শিবসেনা পক্ষেই ভোট দেবে। কিন্তু অনাস্থার দিনে সেই উদ্ধবই বিজেপি সভাপতিকে চমকে দিয়ে শিবসেনাকে অধিবেশন বয়কটের নির্দেশ দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, শিবসেনার মুখপত্রে দেওয়া তিন পর্বের সাক্ষাৎকারে আজ নরেন্দ্র মোদীকে তুলোধনা করেছেন উদ্ধব। আর মোদীকে আলিঙ্গন করায় রাহুল গাঁধীর প্রশস্তিও করা হয়েছে শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’-য়। দেশে একের পর এক গণপিটুনির সমালোচনা করে উদ্ধব সাফ জানিয়েছেন, গত ৩-৪ বছর ধরে দেশে চলা হিন্দুত্বের ভাবনাকে তিনি মেনে নিতে পারছেন না। শিবসেনা প্রধানের বক্তব্য, দেশে ‘মাতা’র (মহিলা) থেকে ‘গোমাতা’ বেশি নিরাপদ। খাওয়া নিয়ে কাউকে নিশানা করা যায় না। বিজেপির হিন্দুত্ব ভুয়ো। সরকারের সমালোচনা করলেই দেশদ্রোহী বলার বিজেপি কে? উদ্ধব বলেন, ‘‘আমরা ভারতীয় জনতার সঙ্গে, ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে নই। আমরা সরকারের অংশীদার হতে পারি। কিন্তু ভুলকে প্রশ্রয় দেব না।’’

শিবসেনার মনোভাব যদিও অনাস্থা ভোটের পরেই বুঝে গিয়েছিলেন অমিত। সে কারণেই গত কাল মুম্বইয়ে দলের বৈঠকে তিনি জানিয়ে এসেছেন, উনিশের ভোটের আগে শিবসেনার উপরে ভরসা রাখা কঠিন। রাজ্যের সব কেন্দ্রে একা লড়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে রাজ্য বিজেপিকে নির্দেশ দিয়ে এসেছেন তিনি। পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চাইছে অন্যরাও। উদ্ধব প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করার পরেই শরদ পওয়ারের দলের নেতা মাজিদ মেমন আজ বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে হারাতে শিবসেনা রাজি হলে আমাদের জোটে তারা স্বাগত।’’ এনসিপির মতে, উদ্ধব বিজেপি জোট ছাড়লে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমঝোতা হতেই পারে। কিন্তু শিবসেনাকে সঙ্গে নিতে রাজ্য কংগ্রেসের এখনও আপত্তি রয়েছে। কংগ্রেস বুঝে নিতে চাইছে, বিজেপি ও শিবসেনা যে ভাবে একে অপরকে আক্রমণ করছে, তা কতটা আন্তরিক কতটাই বা দরকষাকষি।

Advertisement

কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, বিহারে নীতীশ কুমারও একই ভাবে বিরোধী জোটে সামিল হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। রাহুল গাঁধীর তারিফ করেছিলেন, অসুস্থ লালুপ্রসাদের খোঁজ নিয়েছিলেন। কিন্তু অমিতের সঙ্গে বৈঠকের পরে জেডিইউ জানায়, তাদের জোটে সব ঠিকই রয়েছে। কংগ্রেস তাই ভাবছে, লোকসভা ভোটের আগে উদ্ধবও বিজেপির সঙ্গে আসন নিয়ে দরকষাকষি করতে এ সব করছেন না তো?

তবে দলের গোপন বৈঠকে অমিত যে ভাবে ‘একলা চলো’-র ডাক দিয়েছেন, তাতে বিজেপির অনেকে মনে করছেন, জোটে ‘অল ইজ নট ওয়েল’। জোট ভাঙতেও পারে। তাতে শিবসেনার বেশি লোকসান, বিজেপিরও ক্ষতি কম নয়। কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘টিডিপি ছেড়েছে। শিবসেনাও একা লড়ার কথা বলছে। বিজেপি ধীরে ধীরে মোদী ও অমিত শাহের দলই থেকে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন