এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার পর উদ্ধার হওয়া দেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল হাসপাতালের মর্গে। ছবি: রয়টার্স।
অন্য যাত্রীর দেহাবশেষ পাঠানো হয়েছে! অহমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনায় ব্রিটেনের নিহত দুই নাগরিকের পরিবারের এই দাবি ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল। ডিএনএ পরীক্ষা করে তাঁরা জানতে পেরেছেন, কফিনে যে দেহাবশেষ পাঠানো হয়েছে, তা তাঁদের পরিজনের নয়।
বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট আমরা দেখেছি। এ বিষয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। নিয়ম মেনে দেহ চিহ্নিতকরণের কাজ করেছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পেশাদারিত্ব এবং শ্রদ্ধার সঙ্গেই নিহতদের দেহ কফিনবন্দি করে পাঠানো হয়েছিল।’’
নিহত দুই ব্রিটিশ নাগরিকের পরিবারের আইনজীবী জেমস হিলির বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত ১২-১৩টি কফিন পাঠানো হয়েছে ব্রিটেনে। তার মধ্যে অন্তত দু’টি কফিনে যে দেহাবশেষ ছিল, তা তাদের পরিজনের নয় বলেই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট পরিবার। হিলি বলেন, ‘‘আমি গত এক মাস ধরে এই পরিবারগুলোর সঙ্গে রয়েছি। তাদের প্রথম দাবিই হল পরিজনকে (দেহ বা দেহাবশেষ) ফেরত পাওয়া। কিন্তু কোনও কোনও পরিবার যে দেহাবশেষ পেয়েছে, তা তাদের পরিজনের নয়। এই ঘটনা নিয়ে ওরা বিধ্বস্ত। আমার মনে হয়, ওদেরকে বিষয়টি বিস্তারিত জানানো উচিত।’’
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে যে, তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। তবে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ভাবে তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি।
ব্রিটেনের সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, কফিনে ‘ভুল দেহ’ আসায় প্রথামাফিক যে শ্রদ্ধানুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল তা-ও বাতিল করে দিতে বাধ্য হয়েছে নিহত এক ব্রিটিশ নাগরিকের পরিবার। শুধু তা-ই নয়, একটি কফিনে আবার দুই ভিন্ন যাত্রীর দেহাবশেষ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ব্রিটেনের আর এক সংবাদমাধ্যম ‘ডেলি মেল’-এর প্রতিবেদনে। ফিওনা উইলকক্স নামে একটি চিকিৎসককে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, পরে ডিএনএ পরীক্ষা করে দুই যাত্রীর দেহাবশেষ পৃথক করা হয়েছে।
এর আগে এয়ার ইন্ডিয়ার ক্ষতিপূরণের ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল নিহত একাধিক ব্রিটিশ নাগরিকদের পরিবার। তাদের দাবি ছিল, ফর্মের একাধিক জটিল প্রশ্ন রাখা হয়েছে, যার উত্তর দিতে গিয়ে তারা হিমশিম খাচ্ছে। অথচ জটিল আইনি ভাষায় লেখা সেই প্রশ্নের কোনও ব্যাখ্যা ছিল না ফর্মে। এ দিকে, এয়ার ইন্ডিয়া এ-ও বলে রেখেছে, ঠিকঠাক জবাব না এলে তারা ক্ষতিপূরণ দেবে না।
এয়ার ইন্ডিয়া অবশ্য সেই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। তাদের বক্তব্য, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণের অর্থ যাতে নিহতদের পরিবার দ্রুত পায়, আমরা সেই চেষ্টাই করছি। ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই ক্ষতিপূরণের প্রথম কিস্তির টাকা পাঠানো হয়ে গিয়েছে।’’