Prayagraj Murder Case

‘মিট্টি মে মিলা দেঙ্গে’! যোগীর বুলডোজারের নিশানা এ বার সমাজবাদী নেতা আতিকের বাড়ি?

প্রয়াগরাজ পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, একটি ভিডিয়ো ফুটেজ থেকে উমেশ হত্যাকাণ্ডে প্রাক্তন সমাজবাদী সাংসদ আতিক আহমেদের ছেলে আসাদ-সহ মোট পাঁচ জনের জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ) শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ ১৫:১৪
Share:

যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বুলডোজারের নিশানা হতে পারে সমাজবাদী পার্টির প্রাক্তন সাংসদ আতিক এবং তাঁর ছেলে আসাদের বাড়ি। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে শনিবার তিনি বলেছিলেন, মাফিয়াদের মাটিতে মিশিয়ে দেবেন (মিট্টি মে মিলা দেঙ্গে)। বুধবার প্রয়াগরাজে সাক্ষী খুনের ঘটনাতেও বুলডোজার নামালেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আর বিএসপি বিধায়ক রাজু পাল হত্যাকাণ্ডের মূল সাক্ষী উমেশ পালকে খুনের ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত জাফর আহমেদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরে প্রশ্ন উঠল এ বার কি সরকারের ‘লক্ষ্য’ সমাজবাদী পার্টির প্রাক্তন সাংসদ আতিক আহমেদ এবং তাঁর ছেলে আসাদ। পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই আতিকের বাড়ি ভাঙার তোড়জোড় শুরু করেছে প্রয়াগরাজ প্রশাসন।

Advertisement

প্রয়াগরাজ পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, একটি ভিডিয়ো ফুটেজ থেকে উমেশ হত্যাকাণ্ডে প্রাক্তন সমাজবাদী সাংসদ আতিক আহমেদের ছেলে আসাদ-সহ মোট পাঁচ জনের জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে। তাঁদের মধ্যে সোমবার প্রয়াগরাজেরই ধুমনগঞ্জ এলাকার নেহরু পার্কে পুলিশের গুলিতে আরবাজ নামে এক অভিযুক্ত নিহত হয়েছেন। তার পর পুলিশ গ্রেফতার করে আর এক অভিযুক্ত তথা সমাজবাদী পার্টির স্থানীয় নেতা সাদাকত খানকে। সাদাকতের সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের ছবি ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা অখিলেশ বলেন, ‘‘ওই ছবি তুলে ধরে যাঁরা আমাকে নিশানা করছেন, তাঁরা অর্ধসত্য বলছেন।’’ যদিও স্থানীয় সূত্রের খবর, সাদাকত সক্রিয় ভাবে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রসঙ্গত, সোমবার গোরক্ষপুর থেকে সাদকতকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি নেপালে পালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ সূত্রে খবর, সাদাকত ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম বোর্ডিং হস্টেলের ৩৬ নম্বর ঘরে বেআইনি ভাবে থাকছিলেন। আর ওই ঘরেই উমেশ হত্যাকাণ্ডের শুটাররা জড়ো হয়েছিল।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দাবি, উমেশকে খুন করার পরিকল্পনা হয়েছিল বরেলী জেলে। সেই জেলে বন্দি এই খুনে অভিযুক্ত তথা সমাজবাদী পার্টির প্রাক্তন সাংসদ আতিকের ভাই আশরফ। অন্য দিকে, আতিক বন্দি গুজরাতের সাবরমতী জেলে। পুলিশ সূত্রে খবর, উমেশকে হত্যার আগে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা হয়। তার পরই খুনের প্রস্তুতি শুরু হয়। আশরফের বাড়িও বুলডোজারের নিশানা হতে পারে প্রশাসন সূত্রের খবর।

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) বিধায়ক রাজু পাল খুন হয়েছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল কুখ্যাত দুষ্কৃতী তথা প্রাক্তন সাংসদ আতিকের বিরুদ্ধে। সেই মামলার সাক্ষী ছিলেন রাজুর বন্ধু উমেশ পাল। গত কয়েক বছরে একাধিক বার আক্রান্ত হয়েছিলেন উমেশ। জীবনহানির আশঙ্কায় প্রশাসন দু’জন পুলিশকর্মীকে উমেশের দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ করেছিল।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেহরক্ষীর উপস্থিতিতেই আরবাজ এবং তাঁর সঙ্গীরা শুক্রবার প্রয়াগরাজের রাস্তায় প্রকাশ্যে উমেশকে খুন করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার একটি সাদা রঙের এসইউভিতে বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান উমেশ। রাস্তার ভিড়ের মধ্যে মিশে ছিল হামলাকারীরা। উমেশ গাড়ি থেকে নামতেই এক দুষ্কৃতী পিছন থেকে এসে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দৌড়ে একটি গলির মধ্যে ঢুকে যান উমেশ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। দুই দেহরক্ষীর উপর গুলি চালিয়ে উমেশকে পর পর গুলি করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তার পরই বোমা ছুড়তে ছুড়তে এলাকা ছাড়েন দুষ্কৃতীরা। পরে হাসপাতালে উমেশের এক দেহরক্ষীরও মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন