অনিল গোস্বামী
সারদা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত মাতঙ্গ সিংহের গ্রেফতারি ঠেকাতে সিবিআইয়ের অফিসারদের ফোন করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ কর্তা এমন অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এ বার সেই অভিযোগের সঙ্গে জড়িয়ে গেল খোদ স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামীর নাম। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অফিসারেরা আজ মন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে জানিয়েছেন, অনিল গোস্বামীই মাতঙ্গের গ্রেফতারি ঠেকাতে ফোন করেছিলেন বলে কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই ঘটনার জেরে তাঁকে সরতে হতে পারে বলেও খবর। অনিল এখন জম্মু-কাশ্মীরে। বুধবার তাঁর দিল্লি ফেরার কথা। এ বিষয়ে তাঁর তরফ থেকে কোনও বক্তব্য মেলেনি।
সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গত শনিবার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাতঙ্গ সিংহকে গ্রেফতার করে সিবিআই। নরসিংহ রাও সরকারের এই মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতায় সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে ডাকা হয়েছিল। সে দিনই গ্রেফতারের আগে সিবিআই কর্তাদের কাছে কেন্দ্রের সচিব স্তরের এক অফিসারের ফোন আসে। মাতঙ্গের গ্রেফতারি ঠেকাতে সিবিআইকে প্রভাবিত করারও চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। তাতে অবশ্য গ্রেফতারি আটকায়নি। ওই অফিসারের নাম সিবিআইয়ের তরফে প্রকাশ করা হয়নি। তবে মাতঙ্গ যে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলতেন, তা সিবিআই কর্তাদের অজানা ছিল না। যে সব উচ্চপদস্থ আমলার সঙ্গে মাতঙ্গের যোগাযোগ ছিল, তাঁদের উপরেও নজর রাখছে সিবিআই।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত মন্ত্রকের কাছে সিবিআই বা অন্য কারও তরফ থেকে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গোটা বিষয়টি শুনে নির্দেশ দিয়েছেন, যদি কোনও আমলা দোষ করে থাকেন বা সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে কাজ করে থাকেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা সে তিনি যত উচ্চপদস্থই হোন না কেন। প্রয়োজনে তাঁকে মেয়াদ ফুরোনোর আগেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। ওই সূত্রের বক্তব্য, যে আমলার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, “নির্দিষ্ট তথ্য পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সিবিআই ডিরেক্টর অনিল সিনহাও এ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি।
সাধারণত স্বরাষ্ট্র, বিদেশ বা অর্থ মন্ত্রকের সচিবদের মেয়াদ হয় দু’বছর। সম্প্রতি মেয়াদ ফুরোনোর আগেই বিদেশসচিবের পদ থেকে সুজাতা সিংহকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে মেয়াদ ফুরোনোর আগেই কাউকে সরিয়ে দিতে পারে। কারণ, দু’বছরের মেয়াদ নিয়ে কোনও আইন নেই। শুধু সরকারি নির্দেশিকা রয়েছে। কাজেই কাউকে সরানোর ক্ষমতা সরকারের রয়েছে। যার সব থেকে বড় উদাহরণ বিদেশসচিব পদে রদবদল। অনিল গোস্বামীকে স্বরাষ্ট্রসচিব পদে নিয়োগ করা হয়েছিল পি চিদম্বরমের আমলে। আগামী জুন মাসে তাঁর অবসর নেওয়ার কথা।