প্রকাশ্যে প্রস্রাব কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর, ভাইরাল ছবিতে ট্রোলড রাধামোহন

রাস্তায় প্রস্রাবের পাশাপাশি গাড়ির মাথায় লালবাতি ব্যবহার করেও বিতর্কের মুখে পড়েছেন রাধামোহন। গত ১ মে থেকে ভিআইপি-দের গাড়ির মাথায় লালবাতির ব্যবহার নিষিদ্ধ। এই ভিআইপি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সরব স্বয়ং মোদী। ফলে রাধামোহনের এই জোড়া ‘কীর্তি’তে দিকে দিকে নিন্দার ঝড়। ব্যাপক চাপে পড়েছে মোদী সরকার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ০৪:৪০
Share:

রাধামোহন সিংহ।

নরেন্দ্র মোদী সরকারের স্বচ্ছ ভারত অভিযান চলছে জোরকদমে। অভিযান চলছে প্রকাশ্যে শৌচকর্মের বিরুদ্ধেও। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রীরাই এই সব কর্মসূচিকে গুরুত্ব দেন কি না, উঠে গেল সেই প্রশ্ন। কারণ কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহের প্রকাশ্যে প্রস্রাব করার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে নেটিজেনদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ। আর এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল স্বচ্ছ ভারত নিয়ে ঢক্কানিনাদ সত্ত্বেও শৌচাগার নির্মাণে দেশ এখনও কতটা পিছিয়ে। রাস্তার ধারেও নেই যথেষ্ট শৌচাগার। রাধামোহনের সমালোচনার পাশাপাশি এই সমস্যা নিয়েও সরব হয়েছেন বিরোধীরা।

Advertisement

রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে মন্ত্রীমশাইয়ের লালবাতি লাগানো গাড়ি। একটি দেওয়ালের গায়ে প্রস্রাব করছেন রাধামোহন। অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে তাঁর সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীরা। বৃহস্পতিবার নিজেদের টুইটার হ্যান্ডলে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর এই জলবিয়োগের ছবি শেয়ার করেছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। ক্যাপশনে লালু প্রসাদের দলের তরফে বিদ্রুপ করে লেখা হয়েছে, ‘‘কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী। খরা বিধ্বস্ত রাজ্যে তিনি উদ্বোধন করলেন একটি সেচ প্রকল্পের।’’ সংবাদমাধ্যমের দাবি, ২০১৪-র ২৫ জুন বিহারের মোতিহারিতে মন্ত্রীর ওই ছবিটি তোলা হয়েছে। আরজেডি-র দাবি, ছবিটি অত পুরনো নয়।

রাস্তায় প্রস্রাবের পাশাপাশি গাড়ির মাথায় লালবাতি ব্যবহার করেও বিতর্কের মুখে পড়েছেন রাধামোহন। গত ১ মে থেকে ভিআইপি-দের গাড়ির মাথায় লালবাতির ব্যবহার নিষিদ্ধ। এই ভিআইপি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সরব স্বয়ং মোদী। ফলে রাধামোহনের এই জোড়া ‘কীর্তি’তে দিকে দিকে নিন্দার ঝড়। ব্যাপক চাপে পড়েছে মোদী সরকার।

Advertisement

শৌচাগার নির্মাণে এমনিতেই পিছিয়ে বিহার। রাধামোহনের কাণ্ড সেই সমস্যাকেই আরও প্রকট ভাবে সামনে নিয়ে এল। অনেকেই বিষয়টিকে সেই সমস্যার প্রেক্ষাপটেই দেখছেন। তাঁদের মতে, রাস্তায় শৌচাগারের অভাবেই মন্ত্রীমশাইকে প্রকাশ্যে জলবিয়োগের কাজটি করতে হয়েছে। যে সমস্যাকে সামনে রেখে মোদীর স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে বিঁধেছেন বিহারের কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, জাতীয় সড়কের পাশে যত শৌচাগার থাকা উচিত, বিহারে তা নেই। কংগ্রেস নেতাদের কটাক্ষ, এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, স্বচ্ছ ভারত অভিযান নিয়ে যতটা প্রচার হচ্ছে, কাজ ততটা হচ্ছে না। তারই ফল ভুগতে হলো কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে! স্বচ্ছ ভারতের অঙ্গ হিসেবে বিহারের জাতীয় সড়কের ধারে শৌচাগার তৈরি করছেন সুলভ শৌচাগার কর্তৃপক্ষ। সেই কাজ এখনও শেষ হয়নি।

সামাজিক এই সমস্যা থাকলেও নেটিজেনদের বিদ্রুপের হাত থেকে রেহাই পাননি রাধামোহন। এক নেটিজেনের টুইট-বিদ্রুপ, ‘‘সাধারণ মানুষকে স্বচ্ছ ভারতের জন্য কর দিতে হচ্ছে। আর রাধামোহনের মতো মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে প্রস্রাব করছেন। বাঃ নরেন্দ্র মোদীজি বাঃ!’’ অনেকেই রাধামোহনের পদত্যাগ চেয়েছেন। সমালোচনায় মুখর বিরোধীরা। আপ নেতা সোমনাথ ভারতী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দফতর স্বচ্ছ ভারত অভিযান নিয়ে একনিষ্ঠ হলে তাদের উচিত রাধামোহনের কাছে জবাব চাওয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন