Indus Water Treaty

জলকে অস্ত্র করছে ভারত’, সিন্ধু চুক্তি নিয়ে আবার চড়া সুর পাক প্রেসিডেন্ট জারদারির, কী জবাব দিলেন মাণ্ডবীয়?

পশ্চিম এশিয়ার দেশ কাতারের রাজধানী দোহায় সামাজিক উন্নয়ন সংক্রান্ত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সিন্ধু জলচুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ভারতকে দুষেছিলেন জারদারি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ২২:৫০
Share:

(বাঁ দিকে) আসিফ আলি জারদারি, মনসুখ মাণ্ডবীয় (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র।

পাঁচ মাস আগে তাঁর পুত্র বিলাবল ভুট্টো জারদারি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সিন্ধু জলচুক্তি মেনে ভারত যদি পাকিস্তানকে তার প্রাপ্য না দেয় তবে তা ‘নিয়ে নেওয়া হবে’। এ বার পিতা আসিফ আলি জারদারি অভিযোগ করলেন, সামরিক সঙ্ঘাতে সুবিধা করতে না পেরে জলকে ‘অস্ত্র’ করেছে নয়াদিল্লি। বুধবার ওই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়। তিনি বলেন, ‘‘পাক প্রেসিডেন্ট মিথ্যা তথ্য পেশ করে ভারতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’’

Advertisement

পশ্চিম এশিয়ার দেশ কাতারের রাজধানী দোহায় সামাজিক উন্নয়ন সংক্রান্ত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সিন্ধু জলচুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ভারতকে দুষেছিলেন জারদারি। বৃহস্পতিবার সেই মঞ্চ থেকেই পাক প্রেসিডেন্টকে জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যের বিজেপি নেতা মনসুখ। তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তান ক্রমাগত শত্রুতা এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদে মদতের মাধ্যমে সিন্ধু জল চুক্তির চেতনাকে ক্ষুন্ন করেছে। ভারতের বৈধ প্রকল্পগুলিকে বাধা দিয়ে তারা বারবার চুক্তির প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করেছে। আর এখন মিথ্যা প্রচার চালিয়ে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।’’

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ‘ওয়াটার স্ট্রাইক’ করেছিল ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে ৬৫ বছরের পুরনো সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করা হয়। অপারেশন সিঁদুরের পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শনিবার জানিয়ে দেন, সংঘর্ষবিরতি হলেও পাকিস্তানের সঙ্গে কখনওই সিন্ধু জলচুক্তি পুনর্বহাল করবে না ভারত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা একটি খাল খনন করে পাকিস্তানে প্রবাহিত জল রাজস্থানে নিয়ে যাব।’’ এর পরে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনির সরাসরি হামলার হুমকি দিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, টানা ন’বছর আলোচনার পরে ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট জেনারেল আয়ুব খানের মধ্যে সিন্ধু নদীর জলবণ্টন সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছিল। পাকিস্তানের করাচি শহরে গিয়ে এই চুক্তিপত্রে সই করেছিলেন নেহরু। ওই চুক্তি অনুযায়ী, পূর্ব দিকের তিনটি নদী, অর্থাৎ বিপাশা (বিয়াস), ইরাবতী (রাভি) ও শতদ্রুর (সতলুজ়) জলের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে ভারতের। অন্য দিকে, পশ্চিমমুখী সিন্ধু (ইন্ডাস), চন্দ্রভাগা (চেনাব) ও বিতস্তার (ঝিলম) জল ব্যবহার করতে পারবে পাকিস্তান।

Advertisement

জলের নিরিখে সিন্ধু এবং তার শাখা ও উপনদী মিলিয়ে ৩০ শতাংশ ভারত ও ৭০ শতাংশ পাকিস্তান পাবে বলে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নয়াদিল্লির অবস্থানে স্পষ্ট, ওই চুক্তি আর পুনর্বহাল হবে না। ১৯৬০ সালের চুক্তি অনুযায়ী সেচ এবং পানীয় জলপ্রকল্পে জল ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকলেও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সিন্ধু ও তার সব উপনদীতে বাঁধ দেওয়ার অধিকার রয়েছে ভারতের। কিন্তু পাকিস্তান বার বার তাতে বাধা দিয়েছে বলে নয়াদিল্লির অভিযোগ। মনসুখ শুক্রবার বলেন, ‘‘ভারতকে দোষারোপ না করে পাক প্রেসিডেন্টের উচিত, তাঁর নিজের দেশের সামাজিক উন্নয়নে মনোনিবেশ করা।’’ পাক প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তৃতায় গাজ়া এবং কাশ্মীরকে একই বন্ধনীভুক্ত করে ভারতকে ‘এশিয়ার ইজ়রায়েল’ বলেছিলেন। মনসুখের জবাব, সন্ত্রাসে মদতদাতা পাকিস্তানের কাশ্মীর নিয়ে কোনও কথা বলার অধিকার নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement