বিদেশি অনুদান ঘিরে কোপ নামী প্রতিষ্ঠানে

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, সারা দেশের ১২২২টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়ে জানানো হয়েছে, যে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তারা বিদেশি অনুদান পেয়ে থাকে, সেই সব অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য অবিলম্বে যেন সরকারকে জমা দেওয়া হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৪০
Share:

প্রতীকী ছবি।

জমা পড়েনি কর রিটার্ন। এই অভিযোগে দেশের বিভিন্ন নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিদেশি অর্থ সাহায্য পাওয়ার লাইসেন্স বাতিল করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘ফরেন কনট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট’, ২০১০ (এফসিআরএ) অনুযায়ী, ওই সব ক’টি প্রতিষ্ঠানের বিদেশি অনুদান সংক্রান্ত রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে ওই প্রতিষ্ঠানগুলি একবারও কর রিটার্ন নথি জমা দেয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

রেজিস্ট্রেশন বাতিলের তালিকায় রয়েছে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ), দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় (ডিইউ), আইআইটি দিল্লি, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ, ইন্দিরা গাঁধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটি (ইগনু), ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর), দিল্লির গার্গী কলেজ, লেডি আরউইন কলেজ, দ্য দুন স্কুল ওল্ড বয়েজ অ্যাসোসিয়েশন, সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন, শ্রী মহাত্মা গাঁধী চ্যারিটেবল ট্রাস্ট (গুজরাত), শ্রী সত্য সাই ট্রাস্ট, ইন্দিরা গাঁধী ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ (বেঙ্গালুরু), রামমনোহর লোহিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রাস্ট, এফআইসিসিআই সোশিও ইকনমিক ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০১০-’১১ থেকে ২০১৪-’১৫ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর কোনও কর রিটার্ন জমা দেয়নি এই সব প্রতিষ্ঠান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, সারা দেশের ১২২২টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়ে জানানো হয়েছে, যে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তারা বিদেশি অনুদান পেয়ে থাকে, সেই সব অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য অবিলম্বে যেন সরকারকে জমা দেওয়া হয়। না হলে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

আইআইটি দিল্লির ডিরেক্টর ভি রামগোপাল রাও অবশ্য আজ দাবি করেছেন, সময় মতো রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে তাঁরা এ বিষয়ে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন রাও। প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রার সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়ের আবার দাবি, এফসিআরএ-র নিয়ম অনুযায়ী, যদি কোনও প্রতিষ্ঠান সংসদ বা বিধানসভার আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তার অ্যাকউন্ট যদি সিএজি অডিট করে, তা হলে বিদেশি অর্থ সাহায্য নিতে এফসিআরএ-র রেজিস্ট্রেশন লাগে না। দিল্লির গার্গী কলেজের অধ্যক্ষা প্রমীলা কুমারেরও বক্তব্য, তাঁরা সময় মতো রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন। জেএনইউ এবং ডিইউ-র উপাচার্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা কোনও জবাব দেননি। জানা যায়নি ইগনু কর্তৃপক্ষ এবং সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিক্রিয়াও।

বাতিল তালিকায় নাম থাকা আইসিএমআর আবার ভারত সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত সংস্থা। এই প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর জানিয়েছেন বিষয়টির সমাধান হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এক আধিকারিক জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকা না মানায় এই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও জানিয়েছে, কাগজপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে গাফিলতি হয়েছিল। তবে এক সরকারি আধিকারিকই জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে আগে জানানো হয়েছিল, আইসিএমআর আদৌ এফসিআরএ-র রেজিস্ট্রেশনের আওতায় পড়ে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন