পাঠানকোটের হামলার দায় নিল ইউনাটেড জিহাদ কাউন্সিল

পাঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে হামলার দায় স্বীকার করল ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিল। সোমবার ইউনাটেড জেহাদ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সৈয়দ সাদাকত হোসেন দাবি করেন, কাশ্মীরী জঙ্গিদের এই সংগঠনের ‘হাইওয়ে ব্রিগেড’ বায়ুসেনার ঘাঁটিতে হামলার সঙ্গে জড়িত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:০৯
Share:

জঙ্গি মোকাবিলায় ভারতীয় সেনা। পাঠানকোটে পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।

পাঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে হামলার দায় স্বীকার করল ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিল। সোমবার ইউনাটেড জেহাদ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সৈয়দ সাদাকত হোসেন দাবি করেন, কাশ্মীরী জঙ্গিদের এই সংগঠনের ‘হাইওয়ে ব্রিগেড’ বায়ুসেনার ঘাঁটিতে হামলার সঙ্গে জড়িত। তিনি জানান, এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তান জড়িত নয়। কাশ্মীরে গত ২৭ বছর ধরে যে সংগ্রাম চলছে তারই বহিঃপ্রকাশ এই হামলা। শুধু কাশ্মীর নয়, কাশ্মীরী জঙ্গিরা ভারতের যে কোনও জায়গায় হামলা চালাতে পারে। ভারতকে আরও ফল ভুগতে হবে বলেও সৈয়দ সাদাকত হোসেনের দাবি।

Advertisement

ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছিল, পাঠানকোটে হামলার দায় জইশ-ই-মহম্মদের। মৌলালা মাসুদ আজহারের হাতে তৈরি এই জঙ্গি সংগঠন। জঙ্গিদের করা ফোনের সূত্রে ধরে এই তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে আসে। তা ছাড়া জইশ-এর আগের হামলার ছকের সঙ্গে এই হামলার মিল রয়েছে। খুব বেশি দূর যেতে হবে না। কয়েক মাস আগে প্রায় একই ভাবে পঞ্জাবের গুরুদাসপুরেই হামলা চালিয়েছিল জইশ।

১৯৯০-এ কাশ্মীরে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলিকে এক ছাতার তলায় আনতে ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিল গড়ে ওঠে। জঙ্গিদের অস্ত্র ও অর্থের যোগানের প্রক্রিয়াটি মসৃণ করার জন্য আইএসআই এই সংগঠনটি গড়ে তুলতে মদত দেয়। আইএসআই-এর কাশ্মীর ডেস্ক এই সংগঠনটির দেখভাল করে বলে ভারতীয় গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। এই সংগঠনের সদর দফতর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্‌ফরপুর। প্রথম দিকে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের এখানেও নাম লেখাতে হত। তার পরে নানা ভাঙা গড়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছে এই সংগঠন। এক সময়ে এই সংগঠনের প্রধান ছিলেন হিজবুল মুজাহিদিনের প্রধান সৈয়দ সালাউদ্দিন। পরে হিজবুল একক ভাবে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলে সৈয়দ সালাউদ্দিনকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে ২০০০ সালে আবার হিজবুল যুদ্ধবিরতি তুলে নিয়ে ওই সংগঠনের সদস্য হয়। হিজবুল ছাড়া লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদ, জেকেএলএফ, আল-বদর মুজাহিদিন, হরকত-উল-আনসারের মতো বেশ কয়েকটি সংগঠন এর সদস্য।

Advertisement

আরও পড়ুন: ৬০ ঘণ্টার যুদ্ধ শেষ, পাঠানকোটে খতম ৫ জঙ্গি

কিন্তু আজ কেন এই দাবি করছে ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিল? গোয়েন্দাদের ধারণা, পাঠানকোট হামলা থেকে পাকিস্তানের দায় ঝেড়ে ফেলতে এই দাবি উঠেছে। এই হামলাকে কোনও ভাবে কাশ্মীরের সমস্যার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলতে পারলে সুবিধা হয় পাকিস্তানেরই। এর মধ্যেই দু’দেশের বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে আগে দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে বৈঠকের কথা বলা হয়েছে। সেখানে এই ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তানের জড়িত থাকা নিয়ে প্রমাণ পেশ করতে চায় ভারত। তার আগেই দায় স্বীকার করার কথা বলল ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন