Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

৬০ ঘণ্টার যুদ্ধ শেষ, পাঠানকোটে খতম ৫ জঙ্গি

তবে কি সব জঙ্গি নিকেশ করা গেল? পাঠানকোট কাণ্ডে আরও দুই জঙ্গির দেহ উদ্ধারের পর প্রশ্নটা উঠছে। আগেই নিকেশ করা হয়েছিল চার জঙ্গিকে। শনিবার ভোর রাত থেকে হামলা শুরুর প্রায় ষাট ঘণ্টা পরে সোমবার দুপুরে পঞ্চম জঙ্গির দেহ উদ্ধার হয় বায়ুসেনার বিমানঘাঁটি থেকে। এ দিন ওই বিমানঘাঁটির ক্যান্টিন ট্যাঙ্ক দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে সেই ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার হয় আরও এক জঙ্গির দেহ।

পাঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে সেনা জওয়ানরা। ছবি: এএফপি।

পাঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে সেনা জওয়ানরা। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৬ ১২:১৩
Share: Save:

তবে কি সব জঙ্গি নিকেশ করা গেল?

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি তেমনই। সোমবার বিকেলে তিনি জানিয়ে দিলেন, ৬০ ঘণ্টার অভিযান শেষে পঞ্চম জঙ্গিকে নিকেশ করা গিয়েছে। আগেই খতম করা হয়েছিল চার জঙ্গিকে। শনিবার ভোর রাত থেকে হামলা শুরুর প্রায় ষাট ঘণ্টা পরে এ দিন বিকেলে পঞ্চম জঙ্গির দেহ উদ্ধার হয় বায়ুসেনার বিমানঘাঁটি থেকে। পাশাপাশি জেটলির দাবি, এখনও চিরুনি তল্লাশি জারি রয়েছে। আশঙ্কা, আর কোনও জঙ্গি লুকিয়ে নেই তো? ঘটনাচক্রে, এ দিনই গোটা হামলার দায় স্বীকার করেছে ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিলের হাইওয়ে স্কোয়াড।

জেটলি এ দিন বলেন, ‘‘জঙ্গিরা আমাদের ওই বায়ুসেনা বিমানঘাঁটির সম্পত্তি ক্ষতি করতে এসেছিল। তারা আত্মঘাতী বাহিনী।’’

এ দিন সকাল থেকেই গুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই আওয়াজ আরও বাড়তে থাকে। বোঝা যায়, বিমানঘাঁটি চত্বরের আবাসিক এলাকার একটি দোতলা বাড়ি থেকে গুলি ছুটে আসছে। সেই এলাকাকে নির্দিষ্ট করেই সেনা অভিযান চলতে থাকে। প্রবল গোলাগুলির মধ্যে সেখান থেকে এক জঙ্গির দেহ উদ্ধার হয়। তবে, ক্ষতবিক্ষত চেহারা দেখে চেনার কোনও উপায় ছিল না। ফরেন্সিক তদন্তের জন্য ওই দেহ পাঠানো হয়েছে।

প্রায় ১৫০০ পরিবার থাকে পাঠানকোটে বায়ুসেনার ওই বিমানঘাঁটি চত্বরে। তবে তাঁদের সকলেই সুরক্ষিত আছেন বলে এ দিন সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে। চত্বর যে হেতু অনেক বড়, কাজেই জঙ্গি নিকেশ করতে সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন জেটলিও। এ দিন সকালে একই কথা জানিয়েছিলেন এনএসজি-র এক আধিকারিকও। সকালে এনএসজির তরফে জানানো হয়, এখনও ওই বিমানঘাঁটিতে দুই জঙ্গি রয়ে গিয়েছে। জঙ্গি নিকেশ করতে সেনা, এনএসজি এবং গরুড় বাহিনী যৌথ ভাবে অভিযান চালায়।

এ দিন সকালে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এনএসজির তরফে বলা হয়, ওই বিমানঘাঁটি এলাকা যথেষ্ট বড়। অভিযান চালাতে সমস্যা হলেও জঙ্গিদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চলছে। সম্পূর্ণ জঙ্গিমুক্ত করতে এখনও অনেকটা সময় লাগবে। তবে, সেখানকার সমস্ত জওয়ান এবং তাঁদের পরিবার সুরক্ষিত আছেন। শনিবার ভোর রাত থেকে শুরু হওয়া জঙ্গি হামলার জেরে সাত জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার তাঁদের শেষকৃত্য হওয়ার কথা।

পড়ুন: গ্রেনেড-গুলি ধোঁয়াশায় রুদ্ধ পাঠানকোট

গোয়েন্দাদের দাবি, জঙ্গিরা মূলত দুটো দলে ভাগ হয়ে ওই বিমানঘাঁটিতে ঢুকেছিল। জঙ্গিদের এক জন ফোনে তাদের বার্তাবাহককে এ কথা জানায়। আড়ি পেতে সে কথা গোয়েন্দাদের নজরে আসে বলে সূত্রের খবর। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা পঞ্জাব পুলিশের অফিসার সালবিন্দর সিংহ এবং তাঁর রাঁধুনিকে জেরা করছে। জঙ্গি অপহরণের সময় তাঁরা ওই গাড়িতে ছিলেন।

সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)-র তরফে এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে একটি রিপোর্ট জমা দেয়। সেখান জানানো হয়, কোন পথে জঙ্গিরা পাকিস্তান থেকে এ দেশে প্রবেশ করেছিল! সূত্রের খবর তাদের ধারণা, জঙ্গিরা উঘ নদী পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে।

রবিবার বিস্ফোরণে মারা যান এনএসজি-র বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিরঞ্জন। আহত হন আরও চার জওয়ান। সেনার গুলিতে হত এক জঙ্গির দেহ থেকে গ্রেনেড নিয়ে নষ্ট করতে গিয়ে হঠাৎ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় নিরঞ্জনের। আগামিকাল তাঁর শেষতকৃত্য সম্পন্ন হবে কেরলের পালাক্কড়ে। সেখানেই মৃত জওয়ানের বাড়ি। বাকি শহিদ জওয়ানদেরও মধ্যে তিন জনের শেষকৃত্য এ দিন সম্পন্ন হবে বলে সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE