(বাঁ দিকে) কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমারের বাড়িতে প্রাতরাশ সারলেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
এ বার তাঁর ডেপুটি ডিকে শিবকুমারের বাড়িতে প্রাতরাশ সারলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। হাসিমুখে বাড়ির বাইরে সিদ্দারামাইয়াকে অভর্থ্যনা জানালেন উপমুখ্যমন্ত্রী শিবকুমার। তার পরে একসঙ্গে দু’জনে ঢুকে যান বাড়ির ভিতর। খোশমেজাজেই দেখা যায় তাঁদের। দেখে বোঝার উপায় নেই মুখ্যমন্ত্রীর গদি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দুই নেতার শিবিরের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। প্রশ্ন, তবে কি তাঁদের দ্বন্দ্বে ইতি পড়ল?
গত শুক্রবারই কংগ্রেসের হাইকমান্ড কর্নাটকের এই রাজনৈতিক ডামাডোল নিয়ে বিরক্তিপ্রকাশ করে। দুই নেতাকে আলাদা আলাদা ভাবে ফোন করে সব সমস্যা মেটানোর নির্দেশও দেওয়া হয়। তার পরেই সিদ্দারামাইয়া প্রাতরাশে শিবকুমারকে নিজের বাসভবনে আমন্ত্রণ জানান। সেই আমন্ত্রণ পেয়ে শনিবার সকালে সিদ্দারামাইয়ার সরকারি বাসভবন ‘কাবেরী’তে হাজির হন শিবকুমার।
সেই বৈঠকে কী কথা হয় দুই নেতার? শনিবারের বৈঠক শেষে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টও করেন শিবকুমার। লেখেন, ‘‘প্রাতরাশ বৈঠকে কর্নাটকের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতের পথ নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’’ তবে কংগ্রেস সূত্রে খবর, প্রাতরাশের টেবিলে শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান সিদ্দারামাইয়া। যদিও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তার মধ্যেই রবিবার কর্নাটক-সঙ্কট মেটাতে দিল্লিতে বৈঠক বসেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গে-সহ কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার মধ্যে মঙ্গলবার শিবকুমারের আমন্ত্রণে তাঁর বাসভবনে গেলেন সিদ্দারামাইয়া।
জানা গিয়েছে, প্রাতরাশে সিদ্দারামাইয়ার জন্য বেশ কিছু খাবারের আয়োজন ছিল। সেই তালিকায় ছিল ইডলি, দেশি মুরগির পদ (স্থানীয় নাম নাট্টি চিকেন)। সঙ্গে কফি। খেতে খেতেই দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়। তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে? মুখ্যমন্ত্রিত্ব বদলের কোনও কথা হয়েছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি। সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে বিধানসভা অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সেই সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়বেন কি? সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘‘কংগ্রেস হাইকমান্ড এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা দু’জনেই তা মেনে চলব।’’
প্রসঙ্গত, নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে কর্নাটক কংগ্রেসের অন্দরে দড়ি টানাটানি শুরু হয়। ভোক্কালিগা জনগোষ্ঠীর প্রভাবশালী নেতা শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তোলেন তাঁর অনুগামীরা। দিল্লিতে কর্নাটকের কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশ দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করার পর টানাপড়েন আরও বেড়ে যায়। ওই বিধায়কদের দাবি, ২০২৩ সালে ওবিসি জনগোষ্ঠীর নেতা সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী করার সময় কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব আশ্বাস দিয়েছিলেন, আড়াই বছর পর মুখ্যমন্ত্রী করা হবে শিবকুমারকে। অর্থাৎ, পাঁচ বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্ব সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে দুই নেতার মধ্যে। সেই ‘প্রতিশ্রুতির সম্মান’ রাখার দাবি তুলেছেন শিবকুমার-ঘনিষ্ঠেরা। ঘটনাচক্রে, অক্টোবরেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আড়াই বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেছেন সিদ্দারামাইয়া। অনুগামীদের দাবি, এ বার শিবকুমারের পালা।