তিস্তা নদীতে দুর্ঘটনা, নবদম্পতিকে নিয়ে ১০০০ ফুট গভীর খাদে উল্টে গেল গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
এক মাসও হয়নি বিয়ে হয়েছিল! মধুচন্দ্রিমা উপলক্ষে সিকিমে বেড়াতে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের নবদম্পতি। কিন্তু ফেরা হল না। গত বৃহস্পতিবার সিকিমে ১০০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে যাওয়া পর্যটকদের গাড়িতে তাঁরাও ছিলেন। সেই থেকে এখনও খোঁজ মেলেনি তাঁদের।
সংবাদমাধ্যম ‘দৈনিক ভাস্কর’-এর প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজ দম্পতির নাম কৌশলেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ (২৯) এবং অঙ্কিতা (২৬)। মাত্র ২৫ দিন আগেই বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। গত ২৪ মে তাঁরা মধুচন্দ্রিমা উপলক্ষে সিকিমে পৌঁছোন। তার চার দিনের মাথায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়ি। গত ২৯ মে রাত ৯টা নাগাদ প্রবল বৃষ্টির মধ্যে তাঁদের গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১,০০০ ফুট গভীর খাদে উল্টে যায়। সোজা গিয়ে আছড়ে পড়ে তিস্তা নদীতে। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন স্থানীয়েরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে এক জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাকি দুই আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, পর্যটকদের ওই গাড়িতে চালক-সহ মোট ১১ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৮ জন এখনও নিখোঁজ। ওই গাড়িতেই ছিলেন কৌশলেন্দ্র-অঙ্কিতা। তাঁদেরও খোঁজ মেলেনি।
অঙ্কিতা লখনউয়ের মেদান্ত হাসপাতাল সংলগ্ন একটি ওষুধের দোকান চালাতেন। অন্য দিকে, কৌশলেন্দ্র দিল্লিতে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দু’জনেই বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। ফলে দুর্ঘটনার খবর শোনার পর থেকেই দুই পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া। ইতিমধ্যে ওই দম্পতির আত্মীয়েরা সিকিমেও পৌঁছে গিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার চুংথাং থেকে মুন্সিথাংয়ের দিকে যাচ্ছিল পর্যটকদের গাড়িটি। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং ওড়িশার পর্যটকদের তিনটি দল ওই গাড়ি ভাড়া করেছিল। কিন্তু আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় রাতের অন্ধকারে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি গড়িয়ে পড়ে হাজার ফুট নীচে। এখনও উদ্ধারকারী দল এবং সেনাবাহিনীর সদস্যেরা উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নিখোঁজদের সম্পর্কে এখনও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এখনও বিপর্যস্ত সিকিম। জায়গায় জায়গায় ধস নেমে উত্তর সিকিমের বেশ কিছু এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। রবিবারও সেখানে আটকে থাকা পর্যটকদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে তিস্তার জলস্তরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সঙ্গে নেমেছে ধস। ফলে উত্তর সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছেন পর্যটকেরা। তবে সোমবার পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হয়েছে।