ফাইল ছবি।
মোদীর ঘরে ‘অপমান’ আর না সয়ে রাহুল গাঁধীর শিবিরে গেলেন উপেন্দ্র কুশওয়াহা। আর এক অসন্তুষ্ট শরিক রামবিলাস পাসোয়ানকে ধরে রাখতে ঘাম ছোটালেন মোদীর দুই সেনাপতি অমিত শাহ, অরুণ জেটলি। গোটা বিহারের রাজনীতিই এখন রাজধানীতে। আগামিকাল চলে আসছেন নীতীশ কুমারও।
রাহুল গাঁধী এখনও শিমলায়। দিল্লিতে তাঁর অনুপস্থিতিতেই আজ কংগ্রেস দফতরে হাজির হলেন লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব, শরদ যাদব, এনডিএ ছেড়ে বিহারের বিরোধী শিবিরে যোগ দেওয়া জিতনরাম মাঁঝি। আর ক’দিন আগেও যিনি মোদী-মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন, আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিলেন সেই উপেন্দ্র কুশওয়াহা। কাল ও আজ রাতে দফায় দফায় বৈঠকে বিহারের বিরোধী মহাজোটে আসন ভাগাভাগি কেমন হবে, তার প্রাথমিক খসড়াও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পাসোয়ানের মতিগতির উপরে নজর রেখে সেই ঘোষণাটা করা হয়নি।
গত কয়েক দিন ধরেই পাসোয়ান বেসুরো গাইছেন। আজও রামবিলাস-পুত্র চিরাগ প্রধানমন্ত্রী ও অরুণ জেটলিকে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছেন, নোট বাতিলের জেরে লাভ কী হয়েছে। পাঁচ রাজ্যের হারের পর রাহুলের প্রশস্তি করাও শুরু করেছেন চিরাগ। এই পরিস্থিতিতে কাল নীতীশ আসার আগেই আজ অমিত শাহ, অরুণ জেটলি বৈঠক করেন পিতাপুত্রের সঙ্গে। চিরাগের চিঠি নিয়ে জেটলি উষ্মাও প্রকাশ করেন। কিন্তু চিরাগই দলের সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন রামবিলাস। তাতে আরও অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির।
উপেন্দ্র-বিদায়ের আগে অমিত ও নীতীশ ঘোষণা করেছিলেন, দুই দল সমান আসনে লড়বে। বিজেপির হিসেবে যা ছিল, দুই দল ১৭টি করে আসন লড়বে। উপেন্দ্র বিদায়ের পর বিহারের ৪০ লোকসভা আসনে ভাগাভাগির পর বাকি থাকে ৬টি আসন। কিন্তু পাসোয়ান গত বার ৭টি আসন লড়ে ৬টিতে জিতেছিলেন। রামবিলাস নিজে এ বার লোকসভায় না লড়ে অসম থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হতে চান। এখন সেটি নিয়েই দর কষাকষি চলছে। কাল ফের বৈঠক হবে জেটলির সঙ্গে।
কিন্তু বিরোধী শিবির আশায়, বিজেপির সঙ্গে বনিবনা না হলে পাসোয়ান চলে আসবেন তাঁদের দিকে। সেই সম্ভাবনা নিয়ে আজ তেজস্বী বলেন, ‘‘ঠান্ডা পড়ছে, আবহাওয়া বদলাচ্ছে, দেশের আবহাওয়াও বদলাবে।’’ অর্থাৎ, হাওয়া-মোরগ বলে পরিচিত পাসোয়ানকে বিরোধী শিবিরে নিতে যে আপত্তি নেই, তারই ইঙ্গিত দিলেন তিনি। তবে কার্যকরী জোট গঠন করতে হলে অহং বিসর্জন দেওয়ার প্রয়োজনের কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। আজ উপেন্দ্র ইউপিএ শিবিরে এসে তোপ দাগলেন মোদী-নীতীশকে। বললেন, ‘‘নীতীশ পণ করেছিলেন আমাকে শেষ করার। এনডিএ-তে অপমানিত হচ্ছিলাম। আর ইউপিএ-তে এসে দেখি, সকলে সম্মান দেওয়ার জন্য আগে থেকেই দু’হাত বাড়িয়ে আছেন। রাহুল গাঁধী অনেক উদারতা দেখিয়েছেন।’’