—ফাইল চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মাথার দাম’ ধার্য করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল হইচই হল সংসদে। রাজ্যসভায় তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়ে সপা, বিএসপি-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল তীব্র নিন্দা করল বিজেপি যুব মোর্চা নেতার মন্তব্যের। জয়া বচ্চন তীব্র আক্রমণ করলেন বিজেপিকে। নিজের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ তুলে ধরে পাল্টা আক্রমণে গেলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি জানালেন, এমন মন্তব্য যদি সত্যিই কেউ করে থাকেন, তা হলে রাজ্য সরকার তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।
তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় রাজ্যসভায় এ দিন বিষয়টি উত্থাপন করেন। অধিবেশনে তখন সভাপতিত্ব করছিলেন ডেপুটি চেয়ারপার্সন পিজে ক্যুরিয়েন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত এক জন মুখ্যমন্ত্রীর মাথা কেটে নেওয়ার জন্য যে ভাবে পুরস্কার মূল্য ঘোষণা করা হয়েছে, তা আসলে হিংসাত্মক রাজনীতি এবং সন্ত্রাস কায়েম করার চেষ্টা, মন্তব্য করেন সুখেন্দুশেখর। যুব মোর্চার নেতা বিকাশ ভার্সনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার দাবি তোলেন তিনি। রাজ্যসভায় তখন উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে যে মন্তব্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ, সে মন্তব্যের সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই বলে তিনি জানিয়ে দেন। যদি সত্যিই এমন মন্তব্য কেউ করে থাকেন, তা হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে, জানান নকভি।
যুব মোর্চা নেতার মন্তব্যকে বিজেপি অনুমোদন না করলেও গোলমাল কিন্তু সহজে থামেনি। সংসদের হেভিওয়েটরা বিষয়টি নিয়ে একে একে সরব হতে শুরু করেন। বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবাতী এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তাকে ভয়ঙ্কর বলে আখ্যা দেন মায়াবতী। ডেপুটি চেয়ারম্যান পিজে ক্যুরিয়েন তাঁকে থামানোর চেষ্টা করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই মন্তব্যের নিন্দা করেছেন এবং রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছেন, সুতরাং আর কিছু বলার থাকতে পারে না— এই কথা বলে মায়াবতীকে থামাতে চাইছিলেন ক্যুরিয়েন। কিন্তু তিনি থামেননি। বিজেপিকে তিনি তীব্র আক্রমণ করেন।
মায়াবতীও এ দিন তীব্র নিন্দা করেছেন মমতার বিরুদ্ধে আসা হুমকির। —ফাইল চিত্র।
সপা সাংসদ জয়া বচ্চনের আক্রমণ ছিল আরও ধারালো। তিনি বিজেপির যুব নেতার মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন। এক জন মহিলা সম্পর্কে কথা বলার সময় কী ভাবে কথা বলা উচিত, সে বোধ বিজেপি নেতাদের রয়েছে কি না, জয়া সেই প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গরুকে নিরাপত্তা দিতে পারি, কিন্তু মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারি না।’’ জয়া বচ্চনের এই মন্তব্যে তুমুল হইচই শুরু করে দেন বিজেপি সাংসদেরা। তাতে জয়া আরও উত্তেজিত হন এবং গলা আরও চড়িয়ে মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন হিংসাত্মক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা শুরু করেন।
আরও পড়ুন: মমতার মাথা কেটে আনলে ১১ লাখ টাকা পুরস্কার, ঘোষণা বিজেপি নেতার
পাল্টা মোকাবিলায় ময়দানে নামেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। মহিলা রাজনীতিকদের নিরাপত্তার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ভাবেন কি না, রূপা সেই প্রশ্ন তুলে হইচই শুরু করেন। তুমুল উত্তেজিত রূপা বলতে থাকেন, ‘‘আমি নিজে পুলিশের উপস্থিতিতে একাধিক বার আক্রান্ত হয়েছি। পুলিশ দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।’’ পশ্চিমবঙ্গের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে জানেন না, অভিযোগ করেন রূপা।