এক দশকেরও বেশি দর কষাকষির অবসান। মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান এ বার থেকে ভারতীয় সেনাঘাঁটিতে এসে রসদ ভরে নিতে পারবে। তা সে জ্বালানিই হোক বা খাদ্য-পানীয়। প্রয়োজনে মেরামতির কাজও সেরে নিতে পারবে তারা। একই ভাবে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ বা বিমানও যে কোনও মার্কিন সেনাঘাঁটিতে একই ধরনের সুবিধা পাবে।
মনমোহন সরকারের আমল থেকে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও এত দিন বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। কারণ, বাম দলগুলি ও কংগ্রেসেরও একাংশের মত ছিল, এতে ভারতের স্বাধীন বিদেশনীতির উপরে প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, এর ফলে বার্তা যাবে যে ভারত আমেরিকার যুদ্ধে সামিল হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সমঝোতা করল মোদী সরকার। এখন ভারত সফরে এসেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব অ্যাস্টন কার্টার। আজ দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে খাতায় কলমে চুক্তি সই হবে।
মোদী সরকারের যুক্তি, মার্কিন সেনারা ভারতে দীর্ঘ দিন ঘাঁটি গেড়ে থাকবেন না। এখন কোনও মার্কিন বিমান বা জাহাজ ভারতে জ্বালানি ভরলে আলাদা ভাবে অনুমতি নিতে হয়। এ বার থেকে সেই অনুমতি আর লাগবে না। পর্রীকর ও কার্টারের দাবি, দু’দেশের সামরিক বাহিনী এখন নানা ক্ষেত্রে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাতেও এই ধরনের জ্বালানি ভরার সুযোগ থাকলে সুবিধে হয়।
সমঝোতার পাশাপাশি নিজেদের উদ্বেগের কথাও কার্টারকে জানিয়েছে দিল্লি। পাকিস্তানকে আমেরিকার এফ১৬ বিমান বিক্রি নিয়ে আপত্তি মোদী সরকারের। তবে কার্টারের দাবি, ওই বিমান পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে না। আফগানিস্তান সীমান্তে জঙ্গি দমন অভিযানে ওই বিমান থেকে হামলা চালানো হবে।
প্রত্যাশিত ভাবেই ভারত-মার্কিন সমঝোতার বিরোধিতা করেছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নীলোৎপল বসু বলেন, ‘‘২০০৫-এ যখন তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তিতে সই করেছিলেন, তখনই আমরা বলেছিলাম, ভারতকে আমেরিকার অধস্তন শরিকে পরিণত করা হচ্ছে।’’