India US Trade Talks

ভারত আমাদের এযাবৎকালের সেরা প্রস্তাব দিয়েছে! বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দাবি আমেরিকার, উল্লেখ সমস্যার কথাও

ভারত এবং আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তির পথে অন্যতম প্রধান বাধা হয়ে উঠেছে কৃষিজ পণ্য সংক্রান্ত বিষয়ে দিল্লির আপত্তি। আমেরিকা চায় তাদের কৃষিজ পণ্য, বিশেষ করে ভুট্টা, সয়াবিনের মতো শস্যগুলি ভারতের বাজারে রফতানি করতে। কিন্তু তাতে সায় নেই নয়াদিল্লির।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:৩৬
Share:

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

ভারতের কাছ থেকে এযাবৎকালের সেরা প্রস্তাব পেয়েছে আমেরিকা। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে এমনটাই দাবি করলেন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। বুধবার থেকেই নয়াদিল্লিতে ফের এক দফায় বাণিজ্য আলোচনা শুরু হয়েছে ভারত-আমেরিকার মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের এমন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তবে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সমঝোতা একটি কঠিন কাজ বলেও মনে করছেন গ্রিয়ার।

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরে দফায় দফায় আলোচনা চললেও ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আলোচনা কতদূর অগ্রসর হয়েছে, তা নিয়েও কোনও দেশই সরকারি ভাবে বিস্তারিত মন্তব্য করেনি। এরই মধ্যে চলতি সপ্তাহে ফের ভারতে এসেছেন আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধিরা। বুধবার থেকে নয়াদিল্লিতে দু’দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে দু’দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে। ঠিক এমনই এক সময়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে মুখ খুললেন গ্রিয়ার (তিনি ভারতে সফররত বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সদস্য নন)।

বুধবার মার্কিন সেনেটের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন্‌স কমিটির প্রশ্নের জবাবে ওয়াশিংটনে গ্রিয়ার বলেন, “আমরা যখন এই বিষয়ে আলোচনা করছি, তখন আমাদের একটি প্রতিনিধিদল নয়দিল্লিতে রয়েছে। শস্য, মাংস এবং অন্য কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে ভারতের নির্দিষ্ট আপত্তি রয়েছে। আপনারা ঠিকই বলেছেন, ওদের (ভারতের) সঙ্গে বাণিজ্যিক বোঝাপড়ায় খুব কঠিন কিছু বাধা রয়েছে। আমি এ বিষয়ে একশো শতাংশ একমত। তবে ওরা বেশ কিছু ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছে। ওরা আমাদের সঙ্গে যে ধরনের প্রস্তাব নিয়ে কথা বলেছে, তা একটি দেশ হিসাবে আমাদের কাছে এযাবৎকালের সেরা প্রস্তাব। আমি মনে করি, (আমেরিকার জন্য ভারত) একটি কার্যকর বিকল্প বাজার।”

Advertisement

বস্তুত, ভারত এবং আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তির পথে অন্যতম প্রধান বাধা হয়ে উঠেছে কৃষিজ পণ্য সংক্রান্ত বিষয়ে দিল্লির আপত্তি। আমেরিকা চায় তাদের কৃষিজ পণ্য, বিশেষ করে ভুট্টা, সয়াবিনের মতো শস্যগুলি ভারতের বাজারে রফতানি করতে। কিন্তু তাতে সায় নেই নয়াদিল্লির। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দেশীয় কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করা বরাবর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠে। তাই এ বিষয়ে শুরু থেকেই সাবধানী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। দেশীয় বাজারে কৃষকদের বিদেশি প্রতিযোগিতার মুখে ফেলতে চাইছে না নয়াদিল্লি। তা নিয়ে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে মতানৈক্যের প্রভাব পড়েছিল বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার উপরেও। গত অগস্টে এই মতানৈক্যের কারণেই ভেস্তে গিয়েছিল বাণিজ্য আলোচনা।

সম্প্রতি ভারত থেকে আমদানি করা চালের উপরে শুল্কের হার আরও বৃদ্ধি করার কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত সোমবারই এ বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধির এমন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও অন্যান্য বারের মতো এ ক্ষেত্রেও বিস্তারিত কোনও মন্তব্য করা হয়নি। ফলে ‘এযাবৎকালের সেরা’ প্রস্তাব বলতে গ্রিয়ার কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ভারতের তরফেও এ বিষয়ে কিছু খোলসা করা হয়নি। তবে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছেন, ‘‘নিরবচ্ছিন্ন ভাবে আলোচনা চলছে। দ্রুত আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির (প্রথম দফা) দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement