Kumbh Mela Holy Dip

কুম্ভমেলায় ত্রিবেণি সঙ্গমের জল স্নানযোগ্য! দাবি যোগী আদিত্যনাথের, মানছেন না কেন্দ্রীয় সংস্থারই রিপোর্ট?

কুম্ভমেলায় নদীর জল কি আদৌ স্নান করার যোগ্য? কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্টের পর তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। যদিও যোগীর দাবি, শুধু স্নানই নয়, সঙ্গমের জল ‘আচমন’ (পবিত্র জলপান)-এরও যোগ্য!

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:০৯
Share:

কুম্ভস্নান নিয়ে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভায় মন্তব্য যোগী আদিত্যনাথের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

কুম্ভমেলার সময়ে ত্রিবেণি সঙ্গমের জল স্নানযোগ্য। বুধবার এমনই দাবি করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সম্প্রতি জাতীয় পরিবেশ আদালতে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনস্থ এই সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, জানুয়ারির ১২-১৩ তারিখে নদীর জল পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিম্যান্ড (বিওডি)-এর নিরিখে ওই জল স্নানের জন্য উপযুক্ত নয়। তা হলে কি কেন্দ্রীয় সংস্থার রিপোর্টেরই বিরোধিতা করছেন যোগী?

Advertisement

কুম্ভমেলা শুরু হয়েছে ১৩ জানুয়ারি থেকে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জল পরীক্ষা করেছে ঠিক কুম্ভমেলা শুরুর মুহূর্তেই। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে নদীর জল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ফিকাল কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়ার মাত্রার দিক থেকেও তা স্নানের উপযুক্ত নয়। রিপোর্টে আশঙ্কা করা হয়েছে, কুম্ভমেলার সময়ে, বিশেষ করে ‘শাহি স্নান’-এর দিনগুলিতে পুণ্যার্থীদের ভিড়ের কারণে জলে ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এই রিপোর্টের কথা প্রকাশ্যে আসতেই সমাজবাদী পার্টি এবং অন্য বিজেপি-বিরোধী দলগুলি সমালোচনা শুরু করেছে। বুধবার উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দেন যোগী।

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কুম্ভমেলায় এখনও পর্যন্ত ৫৬ কোটি ২৫ লক্ষেরও বেশি পুণ্যার্থী স্নান করেছেন। কোনও ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করার অর্থ ওই ৫৬ কোটি মানুষের বিশ্বাসকে নিয়ে খেলা করা। যোগী বুধবার উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্ট তুলে ধরেন। তাঁর দাবি, বুধবার ত্রিবেণি সঙ্গমের কাছে গঙ্গায় বিওডির মাত্রা লিটারপিছু তিন মিলিগ্রামের কম ছিল। ডিজ়লভ্‌ড অক্সিজেন (ডিও)-র মাত্রা লিটারপিছু ৮-৯ মিলিগ্রামের মধ্যে ছিল। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এর মানে সঙ্গমের জল শুধু স্নানযোগ্যই নয়, ‘আচমন’ (পবিত্র জল পানের রেওয়াজ)-এরও যোগ্য।”

Advertisement

বস্তুত, নিকাশি বর্জ্যের থেকে জল দূষিত হচ্ছে কি না, তা বোঝা যায় জলে ফিকাল কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি থেকে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ নির্ধারিত অনুমোদিত সীমা বলছে, প্রতি ১০০ মিলিলিটার জলে সর্বাধিক ২৫০০ ফিকাল কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়া থাকলে তা খুব বেশি ক্ষতিকর নয়। যোগীর দাবি, প্রয়াগরাজের জলে ফিকাল কলিফর্ম ওই অনুমোদিত সীমার মধ্যেই রয়েছে।

কুম্ভমেলার ব্যবস্থাপনা এবং পদপিষ্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেস, তৃণমূল, আরজেডি-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল যোগীর সরকারের সমালোচনা করেছে। বুধবার তা নিয়েও বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ শানান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। যোগীর দাবি, সমাজমাধ্যমে অখিলেশ যাদবের দল যা কিছু প্রচার করছে, তা সভ্য সমাজে বলার যোগ্য নয়। উঠে আসে লালুপ্রসাদ যাদবের কুম্ভ ‘ফালতু’ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মৃত্যুকুম্ভ’ মন্তব্যের কথাও। কুম্ভমেলা নিয়ে বিরোধী দলগুলি এ সব মন্তব্য করে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতা’র পরিচয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement