দিল্লির পথ যায় লখনউ ঘুরে।
লোকসভা ভোটের আগে দেশের রাজনীতিতে চালু এই কথাটাকেই আর এক বার প্রমাণ করলেন নরেন্দ্র মোদী ও যোগী আদিত্যনাথ।
লোকসভা ভোটের ঠিক এক বছর আগে উত্তরপ্রদেশকে পাখির চোখ করে বিনিয়োগ টানতে নেমে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী। লখনউয়ে আজ থেকে শুরু হওয়া শিল্প সম্মেলনে নিজেই হাজির হলেন মোদী। মূলত তাঁর চেষ্টাতেই সম্মেলনের প্রথম দিনে ১০৪৫টি মউ সই হল। বিনিয়োগের অঙ্কে যা প্রায় ৪ লক্ষ ২৮ হাজার লক্ষ কোটি টাকা। ঘটনাচক্রে ক’দিন আগে যোগী এই পরিমাণ টাকারই বাজেট পেশ করেছিলেন।
উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে দারুণ ফল করলেও এ রাজ্যে লোকসভার ভোটে বিজেপির সাফল্যের সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন মোদী। কারণ, গত লোকসভা ভোটে রাজ্যের ৮০ টি আসনের মধ্যে ৭১টিই দখল করেছিল বিজেপি। দলের নেতারা মানছেন, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক হাওয়া ক্রমশই যে ভাবে জোরালো হচ্ছে, তাতে পরের লোকসভায় উত্তরপ্রদেশ থেকে এতগুলি আসন জেতাই এখন দলের সামনে চ্যালেঞ্জ। আর লখনউয়ের জমি ভাল ভাবে কব্জা না করতে পারলে তার প্রভাব দিল্লির কুর্সির উপরেও পড়বে। এই উদ্বেগেই এখন যোগীকে সামনে রেখে রাজ্যের মন জিততে নেমেছেন মোদী।
তাই লখনউয়ে আজ শিল্প জগতের নক্ষত্রদের এক মঞ্চে এনেছেন মোদী। মুকেশ অম্বানী, গৌতম আদানি, সঞ্জীব পুরী, টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরণের মতো অনেক শিল্পপতিই হাজির হয়েছেন সম্মেলনে। উত্তরপ্রদেশে আগামী পাঁচ বছরে রিলায়্যান্স জিও (১০ হাজার কোটি টাকা), আদানি গ্রুপ (৩৫ হাজার কোটি), আদিত্য বিড়লা গ্রুপ (২৫ হাজার কোটি) এসেল গ্রুপ (১৮ হাজার ৭৫০ কোটি) বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জিও-র অঙ্কের বাইরেও বিনিয়োগ করবে রিলায়্যান্স।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে মরিশাস, জাপান, নেদারল্যান্ডস, তাইল্যান্ডের শিল্পপতিরাও হাজির হয়েছেন লখনউয়ে। এঁদের এক মঞ্চে এনে রাজ্যের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নকে তুলে ধরতে চেয়েছেন মোদী-যোগীরা। আর এই মঞ্চ থেকেই বুন্দেলখন্ডে ‘প্রতিরক্ষা শিল্প করিডর’ গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন মোদী। তাঁর দাবি, এখানে বিনিয়োগ হবে ২০ হাজার কোটি টাকা। আড়াই লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিনিয়োগ টানতে যোগীর ‘সুপার হিট’ কাজ নিয়েও পিঠ চাপড়েছেন মোদী। তাঁর মতে, বিনিয়োগ টানায় উত্তরপ্রদেশ এখন মহারাষ্ট্রকেও চ্যালেঞ্জ করতে চলেছে। আর যোগীর দাবি, তাঁর রাজ্য ‘বিমারু’ পরিচয় ছেড়ে উন্নত রাজ্যে পরিণত হচ্ছে।
মোদীর ‘নতুন ভারত’-এর মতোই যোগীর মুখে আজ ঘুরেফিরে এসেছে ‘নতুন উত্তরপ্রদেশ’-এর স্লোগান।