গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম (এআই প্রণীত)।
স্কুল কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শাননি। আগাম ছুটির আবেদন করেননি। তার পরে টানা ৭৫ দিন স্কুলে অনুপস্থিত শিক্ষিকা। কী হয়েছে তাঁর? সহকর্মীরা অনেক বার ফোন করেছেন। মেসেজ করেছেন। কোনও জবাব আসেনি। শিক্ষা আধিকারিকের চিঠি গিয়েছে। তার পরেও উত্তর নেই। ওদিকে সহকর্মীদের দাবি, সমাজমাধ্যমে দিব্যি রয়েছেন ছুটিতে চলে যাওয়া শিক্ষিকা। তাঁর নামের প্রোফাইলের পাশে সবুজ আলো জ্বলজ্বল করে দিনভর। জবাবের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার পর ওই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করে দিল শিক্ষা দফতর। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের ঘটনা।
স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছেন, আলিগড়ের লোধা ব্লকে একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন চৈতালি ভারসনে। ওই স্কুল সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে তিনি স্কুলে যাননি। কেন আসছেন না, তাঁর কী হয়েছে, কেউ কিচ্ছু জানেন না। শেষমেশ ২৯ অগস্ট থেকে ওই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সেখানকার বেসিক শিক্ষা অধিকারী (বিএসএ) রাকেশকুমার সিংহের কথায়, ‘‘কাউকে কিছু না জানিয়ে গত ১৬ জুন থেকে স্কুলে যাচ্ছেন না চৈতালি। শিক্ষিকার জন্য তাঁর সহকর্মীরা চিন্তা করছিলেন। অনেক বার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তাঁরা। তাঁর এ হেন উদাসীনতা সরকারি কাজ এবং কর্তব্যে অবহেলা বলে মনে করা হচ্ছে। তাই উত্তরপ্রদেশ সরকারি কর্মী আইন মেনে ওঁকে সাসপেন্ড করা হল।’’
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন চৈতালিকে তাঁরা দুটো চিঠি পাঠিয়েছিলেন। প্রাপ্তিস্বীকার করেননি ওই শিক্ষিকা। কিন্তু নিয়মিত ইনস্টাগ্রাম করেন। কিছু দিন আগে ইনস্টাগ্রামে একটি ‘স্টোরি’ শেয়ার করেন ওই শিক্ষিকা। সেখানে তিনি জানান, তাঁর ফোন নম্বরটি সরকারের তরফে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। ওই নম্বরটি এখন অন্য কেউ ব্যবহার করছেন! এ নিয়ে আদালতে যাবেন তিনি। কিন্তু স্কুলে যাচ্ছেন না কেন, তা নিয়ে সমাজমাধ্যমেও কোনও পোস্ট নেই। সাসপেন্ড হওয়া শিক্ষিকার এক সহকর্মীর কথায়, ‘‘দিন কয়েক আগে ওঁর টাইমলাইনে গিয়ে দেখালাম পরিবারের সকলের সঙ্গে ছবি পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লেখা ‘হর হর গঙ্গা।’ আমাদের সব কিছু কেমন রহস্যজনক লাগছে।’’
বিস্তর চেষ্টার পরে শিক্ষিকার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল সংবাদমাধ্যম। তিনি জানিয়েছেন, স্ত্রী অসুস্থ। তাই স্কুলে যাননি। স্ত্রীর মেডিক্যাল রিপোর্ট শিক্ষা দফতরে পাঠিয়েছেন। সাসপেন্ডের বিষয়টি সম্পর্কে তাঁরা অবগত। এ নিয়ে শিক্ষা দফতরে যাবেন তাঁরা। তবে সেটা পরে।