National News

ঘৃণামেশানো অপরাধ: একে উত্তরপ্রদেশ, দুইয়ে গুজরাত, তিনে রাজস্থান

গো-রক্ষকদের তাণ্ডব হোক বা পারিবারিক সম্মানরক্ষার্থে অথবা জাতপাত বা ধর্মীয় বিদ্বেষের ফলে করা অপরাধ— দেশ জুড়ে গত ছ’মাসে তার শিকার হয়েছেন একশো জন প্রান্তিক মানুষ। এমনটাই দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মেরঠ শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:২৮
Share:

বিদ্বেষজনিত অপরাধের শিকার হয়েছেন দেশের অসংখ্য প্রান্তিক মানুষ। দাবি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের। ছবি: এএফপি।

ধর্ম-বর্ণ-জাতপাতের ঘৃণা বা বিদ্বেষজনিত অপরাধে এ দেশে শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। দুই এবং তিন নম্বর স্থানেও রয়েছে বিজেপি শাসিত আরও দুই রাজ্য, গুজরাত এবং রাজস্থান। এমনটাই বলছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সদ্যপ্রকাশিত রিপোর্ট।

Advertisement

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টির ভারতীয় শাখার তৈরি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালের প্রথম ছ’ মাসে এ দেশে বিদ্বেষজনিত অপরাধের ঘটনা ঘটেছে ১০০টি। এর মধ্যে ৬৭টি ঘটনার শিকার দলিতরা এবং ২২টির শিকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা। আক্রান্তদের মধ্যে আছেন রূপান্তরকামীরাও।

সবচেয়ে বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে বিজেপি শাসিত রাজ্য যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশে। চলতি বছরের প্রথম ছ’মাসে সেখানে ১৮টা বিদ্বেষজনিত অপরাধ ঘটেছে। এর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতও। সেখানে ঘৃণা বা বিদ্বেষজনিত হিংসা ঘটেছে ১৩টি। তৃতীয় স্থানে রাজস্থান, ৮টি। তামিলনাড়ু ও বিহারে ৭টি করে।

Advertisement

আরও পড়ুন
রাঁচীতে স্বামী অগ্নিবেশকে মারধর, পাথর, অভিযোগ বিজেপি-র দিকে

২০১৫-র দাদরিকাণ্ডের পর থেকেই এ দেশে ধর্ম-বর্ণভিত্তিক হিংসার ঘটনার রেকর্ড রাখতে শুরু করে অ্যামনেস্টির ভারতীয় শাখা সংগঠন। ওই বছর উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে গো-রক্ষকদের হামলার মুখে মৃত্যু হয় মহম্মদ আখলাকের। বাড়ির ফ্রিজে গোমাংস রাখা আছে, এই গুজবে আখলাককে পিটিয়ে খুন করে এক দল স্বঘোষিত গো-রক্ষক। অ্যামনেস্টির ‘হল্ট দ্য হেট’ ওয়েবসাইট-এর দাবি, আখলাক-কাণ্ডের পর থেকে এ দেশে ৬০৩ জন এ ধরনের অপরাধের শিকার হয়েছেন।

আরও পড়ুন
উন্মত্ত জনতার হিংস্রতা রুখতে কড়া আইন আনুক সংসদ: সুপ্রিম কোর্ট

অ্যামনেস্টির আরও দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গো-রক্ষার নামে হিংসার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বা পারিবারিক সম্মান বাঁচাতে খুনের মতো অপরাধ করা হয়েছে। উত্তর ও পশ্চিম ভারতেই এই ধরণের প্রবণতা বেশি। মেরঠ, মুজফ্‌ফরপুর, সাহরনপুর বা বুলন্দশহরে হিংসার জেরে এ রকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে।

এ দেশে হিংসার এই প্রবণতাকে বিশ্লেষণ করে নিজস্ব মতামত দিয়েছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ার এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর আকর পটেল। তাঁর মতে, “ধর্ম-বর্ণ-জাতপাতের ঘৃণা বা বিদ্বেষজনিত অপরাধ (হেট ক্রাইম)এর জেরে অপরাধের সঙ্গে অন্য অপরাধের একটা মূলগত তফাত রয়েছে। এ ধরনের অপরাধের পিছনে মূলত বৈষম্যমূলক মনোভাব লুকিয়ে থাকে।” কী ভাবে মুক্তি মিলতে পারে এর থেকে? এ প্রসঙ্গে তাঁর দাওয়াই, “পুলিশের উচিত তদন্তের সময় যে কোনও ধরনের সম্ভাব্য বৈষম্যমূলক উদ্দেশ্যকে খুঁজে বার করা এবং তা রেকর্ড করা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন