পটেল-তাস কাড়লেন রাহুল

বিশেষ করে সংসদে পৌঁছনোর আগে ‘একতা দৌড়’-এর সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী যখন পটেলকে উপেক্ষা করার জন্য, তাঁকে ‘ছোট’ করার জন্য, কংগ্রেসকে সদ্য বিঁধে এসেছেন। অথচ উল্টো মেরুতে দাঁড়িয়ে সকালেই ইন্দিরা ও পটেল— দু’জনকে নিয়ে টুইট করে মোদীর পটেল-তাস কেড়ে বিজেপির বিড়ম্বনা বাড়িয়েছেন রাহুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২২
Share:

নীরবতা: সংসদে সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে দেখা হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর। পাশে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। মুখোমুখি পড়েও কথা বললেন না কেউই। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

সংসদ ভবনে হঠাৎই দেখা হয়ে গেল দু’জনের। কিন্তু কথা হল না। রাহুল গাঁধী এবং নরেন্দ্র মোদী। অন্য দিকে তাকিয়ে থাকা মোদীর পাশ দিয়েই গটগটিয়ে বেরিয়ে গেলেন রাহুল। কেউ কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টাই করলেন না। বরং অনুষ্ঠানে বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর পাশে বসে তাঁর সঙ্গে অনেকক্ষণ হাসিমুখে গল্প করলেন রাহুল।

Advertisement

একই দিনে সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মবার্ষিকী আর ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুদিন। প্রধানমন্ত্রী মাতবেন পটেল নিয়ে আর কংগ্রেস স্মরণ করবে ইন্দিরাকে— এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু রাহুল যে পটেলকেও অস্ত্র করার লক্ষ্যে সটান সংসদের সেন্ট্রাল হলে সর্দার পটেলের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে হাজির হবেন, সেটি অপ্রত্যাশিত ছিল বিজেপি নেতৃত্বের কাছে। বিশেষ করে সংসদে পৌঁছনোর আগে ‘একতা দৌড়’-এর সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী যখন পটেলকে উপেক্ষা করার জন্য, তাঁকে ‘ছোট’ করার জন্য, কংগ্রেসকে সদ্য বিঁধে এসেছেন। অথচ উল্টো মেরুতে দাঁড়িয়ে সকালেই ইন্দিরা ও পটেল— দু’জনকে নিয়ে টুইট করে মোদীর পটেল-তাস কেড়ে বিজেপির বিড়ম্বনা বাড়িয়েছেন রাহুল।

আরও পড়ুন:মাকে তালা দিয়ে বেড়াতে গেল মেয়ে-জামাই, জানলা দিয়ে খাবার চাইলেন বৃদ্ধা

Advertisement

প্রতিবারের মতো মোদী এ দিন সকালে ইন্দিরার মৃত্যুদিনে একটি টুইট করেই ক্ষান্ত হয়েছেন। অন্য দিকে খবরের কাগজে পাতাজোড়া ইন্দিরার বিজ্ঞাপন, সকালে শক্তিস্থলে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, মনমোহন সিংহ, রাহুলের উপস্থিতি ও বিকেলে ইন্দিরা গাঁধী পুরস্কার অনুষ্ঠানে অসুস্থ সনিয়ার বক্তৃতা রাহুলের পড়ে শোনানো— দিনভর ইন্দিরাময় ছিল কংগ্রেস।

কিন্তু দেশজুড়ে পটেল জয়ন্তী পালন করে যে ভাবে ইন্দিরাকে ছায়ায় ঢেকে দিতে চেয়েছিলেন মোদী, এ বারে কংগ্রেস সেটি হতে দেয়নি। সে কারণে সকালে পটেলকে অস্ত্র করে প্রধানমন্ত্রী দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতা নিয়ে কংগ্রেসকে তোপ দাগার পরে বিকেলে রাহুল বললেন, দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতার জন্য লড়াই করে প্রাণও দিয়েছেন ইন্দিরা।
এর পরেই মোদীকে নিশানা করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সঙ্কীর্ণ জাতীয়তাবাদের নামে এখন দেশে বিভাজন হচ্ছে। ইন্দিরা যে ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন, আজ ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা সেই মৌলিক জায়গায় আঘাত করছে। দেশের ঐতিহ্য এখন যাঁদের হাতে, তাঁরা মিথ্যা প্রচার করছেন, ইতিহাস নতুন করে লিখছেন, স্বাধীন ভাবনা খর্ব করছেন।’’

কংগ্রেসের বক্তব্য, গুজরাত ভোটের আগে হার্দিক পটেল কাঁটা দূর করতে ও পটেল ভোট টানতে সর্দারকে নিয়ে এত মাতছেন মোদী। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর এমনই পটেল-প্রীতি যে, তাঁর মূর্তিও এখন আনতে হচ্ছে চিন থেকে বানিয়ে! কংগ্রেসের পটেল দেশের ছিলেন, মোদীর পটেল চিনের!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন