ভিখু দাজি ভিলারে। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে।
২০০৮-এর মুম্বইয়ে একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন স্মৃতিচারণ করছিলেন তিনি। ‘‘সেটা ছিল জুলাইয়ের এক সন্ধ্যা। পঞ্চগনিতে মাহাত্মা গাঁধীর স্মরণে একটি প্রার্থনাসভায় বহু অনুরাগী জড়ো হয়েছিলেন। উষা মেহতা, পেয়ারেলাল, অরুণা আসাফ আলিরাও ছিলেন। হঠাৎই মহাত্মার দিকে উন্মত্ত অবস্থায় ছুটে এলেন নাথুরাম। ওঁর হাতে খোলা ছুরি। ধরে ফেলেছিলাম ওঁকে। হাত মুচড়ে ছুরিটা ফেলে দিয়েছিলাম। কিন্তু গাঁধীজি ওঁকে ক্ষমা করে দিলেন।”
১৯৪৪ সালের সেই ঐতিহাসিক ঘটনার কথা বলতে বলতে বারবার পুরনো দিনে হারিয়ে যাচ্ছিলেন ভিখু দাজি ভিলারে বা ভিলারে গুরুজি। নাথুরাম গডসের হাত থেকে যিনি জাতির জনকের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন। বুধবার ৯৮ বছর বয়সে মৃত্যু হল তাঁর। মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার মহাবালেশ্বরে নিজের গ্রামেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে ভিলারের।
আরও পড়ুন: নিজেকে রক্ষা করার ক্ষমতা ভারতের রয়েছে: চিনের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন সুষমা
মহাত্মা গাঁধীর প্রপৌত্র তুষার গাঁধীর লেখা বই অনুযায়ী ১৯৪৪ সালে আগা খান প্যালেসে বন্দি ছিলেন গাঁধী। সেই সময় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে পঞ্চগনিতে হাওয়া বদলাতে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই একটি প্রার্থনাসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন গডসে। গাঁধীজির উপর সেই সময় হামলারও চেষ্টা চালান তিনি। কিন্তু ভিলারের জন্যই সে যাত্রা বেঁচে গিয়েছিলেন মহাত্মা। অবশ্য এর ৪ বছর পর সেই নাথুরামের ছোড়া গুলিতেই দিল্লিতে মৃত্যু হয় মহাত্মা গাঁধীর।
১৯৪৪-এর এই ঘটনা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে অবশ্য দ্বিমত রয়েছে। যদিও তুষার গাঁধী তাঁর বইতে এই ঘটনার উল্লেখ করেছেন। ১৯৪৮-এর হামলার আগেও একাধিক বার গাঁধীর উপর হামলা হয়েছিল বলেও বইতে দাবি করেছেন তুষার।
মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত কখনও কাজ ছাড়া থাকেননি ভিলারে গুরুজি। ২৫ বছর বয়সে কংগ্রেসের রাষ্ট্রীয় সেবা দলের সহ সভাপতি পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। সারা জীবন সমাজের উন্নতিকল্পে নিযুক্ত থেকেছেন। কংগ্রেসের হয়ে লড়ে দু’বার বিধায়কও হয়েছিলেন তিনি।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দেশের সর্বস্তরের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা।