ভোটের নির্ঘণ্টেই মন্দির আন্দোলন

ঘটনাচক্রে আগামী এক বছরে দেশে আটটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। তার মধ্যে মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরাতে ভোট হওয়ার কথা ফেব্রুয়ারি-মার্চে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

ফাইল চিত্র।

রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে আর পিছু হঠতে রাজি নয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। ২৪ নভেম্বর উদুপি ধর্ম সংসদে তারা ঘোষণা করেছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হবে মন্দির নির্মাণ। সেই লক্ষ্যে বছরভর ‘জনজাগরণের’ কর্মসূচি নিতে চলেছে তারা। আগামী ২৬-২৮ ডিসেম্বর ভুবনেশ্বরে পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সেই কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে।

Advertisement

ঘটনাচক্রে আগামী এক বছরে দেশে আটটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। তার মধ্যে মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরাতে ভোট হওয়ার কথা ফেব্রুয়ারি-মার্চে। কর্নাটকে ভোট হবে এপ্রিল-মে মাসে। মিজোরামে পুজোর মুখে। আর ডিসেম্বরে ভোট রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ে।

রাজনীতিকরা মনে করছেন, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর প্রত্যাবর্তন ঘটবে কি না, তার আভাস মিলবে এই সব বিধানসভা ভোট থেকেই। কারণ, কর্নাটক, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ে লোকসভার মোট আসন ৯৩টি। ওডিশা ধরলে সংখ্যাটা হবে ১১৪। সেখানে ভোট লোকসভার সঙ্গেই।

Advertisement

গুজরাত-হিমাচলে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার ঠিক পরেই মন্দির-পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলবে পরিষদ। সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈনের কথায়, ‘‘রামমন্দির নির্মাণের প্রস্তুতি কী ভাবে নেওয়া হবে, কী কী কর্মসূচি হবে, তা ভুবনেশ্বরে ঠিক হয়ে যাবে। গোরক্ষার আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও ঘোষণা করা হবে।’’ কিন্তু ২০১৮-র অক্টোবরে মন্দির নির্মাণ শুরু করা কি আদৌ সম্ভব? সুরেন্দ্রর দাবি, ‘‘আমরা তা করবই।’’ কিন্তু তার মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতের রায় যদি না আসে, বা আদালত ভিন্ন কথা বলে? সুরেন্দ্রর বক্তব্য, ‘‘মনগড়া প্রশ্নের জবাব দেব না।’’

রাজনীতিকদের একাংশের মতে, গোবলয়ের তিন রাজ্যের ভোটের দিকে তাকিয়েই মন্দির তৈরির কর্মসূচি আগাম ঘোষণা করেছে পরিষদ। যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে চ্যালেঞ্জ করে অযোধ্যায় করসেবক নিয়ে গিয়ে আবহ তৈরি করার পরিস্থিতি এখন আর নেই। তাই সরাসরি মন্দির তৈরির কর্মসূচি ঘোষণা করে আসলে ভোটের খেলাই হচ্ছে।

পরিষদের পূর্বাঞ্চলের সংগঠন সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিংহের অবশ্য দাবি, ‘‘পরিষদের সঙ্গে রাজনীতি বা ভোটের সম্পর্ক নেই। মনে রাখবেন, ১৯৮৫ সালে উদুপি ধর্মসংসদেই রামলালার মন্দিরে তালাখোলার ঘোষণা হয়েছিল। ১৯৮৯-এ সেই তালা খোলাও হয়েছিল। এ বার সেই উদুপিতেই মন্দির নির্মাণের ঘোষণা করা হয়েছে।’’ আগামী বছর অক্টোবরে মন্দির নির্মাণ শুরু হতে হলে সারা বছর ধরে সলতে পাকানোটা জরুরি। তাই ১৮ থেকে ৩১ মার্চ প্রতিটি ‘হিন্দু’ গ্রামে রামচন্দ্রের উদ্দেশে সমবেত আরতি কর্মসূচি নিয়েছে ভিএইচপি। এর পরের কর্মসূচি আগামী মাসেই ঘোষিত হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন