National

মৃত্যুর মুখে শিশু, অ্যাম্বুল্যান্স ঠায় দাঁড় করিয়ে রাখল পুলিশ

কোনও মরণোন্মুখ শিশুর প্রাণ নয়, ভিআইপি’র মান-সম্মান রক্ষা করাটাই পুলিশের এক ও একমাত্র দায়িত্ব। অন্তত সেটাই বুঝিয়ে দিল দিল্লি পুলিশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ১৮:৪৩
Share:

সেই অ্যাম্বুল্যান্স।

চুলোয় যাক মুমূর্ষু! আগে ভিআইপি!

Advertisement

কোনও মরণোন্মুখ শিশুর প্রাণ নয়, ভিআইপি’র মান-সম্মান রক্ষা করাটাই পুলিশের এক ও একমাত্র দায়িত্ব। অন্তত সেটাই বুঝিয়ে দিল দিল্লি পুলিশ।

মধ্য দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামের কাছে বুধবার দুপুরের ঘটনা। হু হু করে ছুটে আসছিল একটি অ্যাম্বুল্যান্স। তার ভেতরে অচৈতন্য একটি শিশুর মুখ দিয়ে চাপ চাপ রক্ত উঠে আসছে। সেই রক্তে ভিজে সপসপ করছে অ্যাম্বুল্যান্সের মেঝে। হঠাৎই সেই অ্যাম্বুল্যান্সটাকে হাত দেখিয়ে থামিয়ে দিল দিল্লি পুলিশের এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট। তার পর দীর্ঘ ক্ষণ অ্যাম্বুল্যান্সটিকে দাঁড় করিয়ে রাখল সেখানে।

Advertisement

এই ভিডিও-ই পোস্ট করেছেন প্রীত নারুলা

কেন?

না, কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখান দিয়ে যাবে ভারতে আসা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের গাড়ি। সে গাড়ি আসছে তো আসছেই! মিনিটের পর মিনিট কেটে যাচ্ছে। সেই গাড়ি আসার নাম-গন্ধ নেই। আর সেই গাড়ির জন্যই মুমূর্ষু শিশু নিয়ে হাসপাতালের দিকে ছোটা অ্যাম্বুল্যান্সটিকে দীর্ঘ ক্ষণ থামিয়ে রেখেছেন এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট।

শেষ পর্যন্ত ওই শিশুটির মা চিৎকার করে সার্জেন্টটিকে বলতে বাধ্য হলেন, ‘‘করছেনটা কী? আমাদের গাড়িটিকে (অ্যাম্বুল্যান্স) কেন আটকে রাখছেন শুধু শুধু? বাচ্চাটার কী হবে? বাচ্চাটা মারা গেলে কী হবে? কে দায়িত্ব নেবে?’’ কিন্তু সার্জেন্ট নাছোড়। ওই মহিলার চিৎকার শুনে ছুটে আসেন পথচারীরা। তাঁরাও পুলিশ সার্জেন্টটিকে অনুরোধ করেন চটজলদি অ্যাম্বুল্যান্সটিকে যাওয়ার পথ করে দিতে। তাঁরাই অ্যাম্বুল্যান্সটিকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেন। গোটা ঘটনাটা ভিডিও-তে তুলে রাখেন এক পথচারী প্রীত নারুলা। তাঁর ফেসবুক পোস্টে তিনি সেই ভিডিও’টি দিয়ে দেন।

সেই ভিডিও-তে পুলিশ কর্মীটির সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় পথচারীদের। এক পথচারী ওই পুলিশ কর্মীটিকে বলেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সটিকে যেতে দিন...একটা শিশুর জীবনের চেয়ে কি ভিআইপি বেশি জরুরি হলেন?’’ আরেক জনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনি কি শিশুটির মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন?’’

পরে দু’ মিনিটের ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেলে সমালোচনার বন্যা বয়ে যায়। তার প্রেক্ষিতে দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়, তাঁরা ‘প্রোটোকল মেনে চলেছেন। আর অ্যাম্বুল্যান্সটি খুব সামান্য সময় দাঁড় করানো হয়েছিল।’’

আরও পড়ুন- জয়ার রেহাই সুপ্রিম কোর্টে, পনীর-পালানির হাত মেলানোর জোর চেষ্টা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন