ছাড় পায়নি স্কুলবাসও

দেশ জুড়ে উন্মত্ত করণী সেনা, চার রাজ্যে মাল্টিপ্লেক্সে বন্ধ প্রদর্শনী

উপলক্ষ সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ‘পদ্মাবত’ ঘিরে রাজপুত সংগঠন করণী সেনার তাণ্ডব। ঘটনাস্থল গুরুগ্রামের কাছে ওয়াজিরপুর-পটৌডি রোড।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৮
Share:

রোষানল: ‘পদ্মাবত’-এর মুক্তি নিয়ে বিক্ষোভ চলছেই। তার জেরে করণী সেনার তাণ্ডবে পুড়ল গাড়ি। বুধবার ভোপালে। ছবি: পিটিআই।

হলুদ রঙের স্কুলবাসের মেঝেতে কুঁকড়ে বসে আছে ছোট শিশুরা। বয়স মেরেকেটে ৪ থেকে ৫। কেউ ভয়ে চোখ ঢেকেছে। কেউ কেউ আতঙ্কে শিক্ষিকার কোলে মুখ গুঁজে রয়েছে। তুলনায় বড় ছেলে মেয়েরাও দু’সারি আসনের মাঝের জায়গাটুকুতে মাথায় হাত দিয়ে বাঁচতে ব্যস্ত। বাইরে তখন বাস লক্ষ করে উড়ে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে পাথর। বাসের সামনের কাচ ভেঙে হাঁ। জানলার কাচও গুঁড়িয়ে পড়েছে আসনের উপরে। ভয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছে নার্সারির কয়েকটি শিশু। মোবাইলে তোলা মিনিট দেড়েকের এই ভিডিও এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

Advertisement

উপলক্ষ সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ‘পদ্মাবত’ ঘিরে রাজপুত সংগঠন করণী সেনার তাণ্ডব। ঘটনাস্থল গুরুগ্রামের কাছে ওয়াজিরপুর-পটৌডি রোড। বিকেল তিনটে নাগাদ ওই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিল জি ডি গোয়েঙ্কা ওয়ার্ল্ড স্কুলের বাসটি। তখন বাসে জনা ২৫ পড়ুয়া। ছিলেন কিছু শিক্ষিকা আর স্কুলের কিছু কর্মীও। করণী সেনার সমর্থকেরা প্রথমে পোড়াচ্ছিল হরিয়ানা সরকারের একটি সরকারি বাস। ঠিক পিছনেই থাকা স্কুল বাসটিকেও রেয়াত করেনি তারা। নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীরা ছিল বাসে। এক শিক্ষিকা বললেন, ‘‘পুলিশ সামনেই ছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাদের পাত্তাই দিচ্ছিল না।’’

গোটা ঘটনার জন্য হরিয়ানা সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে দুষেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। রাহুল গাঁধী টুইটে বলেছেন, ‘কোনও যুক্তিতেই শিশুদের হামলার নিশানা করা যায় না।’ হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করেছে কংগ্রেস।

Advertisement

আতঙ্ক: পাথরবৃষ্টির মধ্যে বাসের ভিতরের ছবি। গুরুগ্রামে। ছবি: পিটিআই।

অমদাবাদ থেকে লখনউ, গুরুগ্রাম থেকে মথুরা। সর্বত্র ছবিটা আজ একই রকম। ছবি মুক্তির প্রতিবাদে তাণ্ডব চালিয়েছে করণী সেনা। আর এর জেরে দেশের চারটি রাজ্যে ছবিটির প্রদর্শনী বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘মাল্টিপ্লেক্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’। সভাপতি দীপক আশ জানিয়েছেন, রাজস্থান, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ ও গোয়ার মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে কাল মুক্তি পাবে না ছবিটি।

আরও পড়ুন: ব্যতিক্রম হয়ে থাকল বাংলা, এ রাজ্যে অবাধ পদ্মাবত

কাল ছবিটি মুক্তি পেলে দেশের প্রতিটি সিনেমা হলের সামনে ‘জনতা কার্ফু’ জারি হবে বলে ফের হুমকি দিয়েছেন করণী সেনার সভাপতি লোকেন্দ্র সিংহ কালভি। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘সর্বশক্তি দিয়ে এই ছবির মুক্তি আমরা রুখব।’’

এ দিন করণী সেনা সব চেয়ে বেশি তাণ্ডব চালিয়েছে গুজরাতে। শুধু অমদাবাদেই পুলিশ ৫০ জনকে আটক করে। সেখানে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৩০টি মোটরবাইক। রাজস্থানে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে না জেনেও জয়পুরে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ হয়। মুম্বই, লখনউ, ভোপাল, মথুরাতেও গাড়ি পুড়েছে। মুম্বইয়ে আটক হয়েছে ৫০ জন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement