fine

গ্যাস লিক-কাণ্ডে জরিমানা ৫০ কোটি

বহস্পতিবার রাতে কারখানাটি থেকে আরও গ্যাস লিক হওয়ার খবরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২০ ০৬:০৮
Share:

বিশাখাপত্তনমের এলজি পলিমার্সের এই কারখানাতেই গ্যাস লিক হয়। ছবি: রয়টার্স।

গ্যাস দুর্ঘটনা এবং তার জন্য ১১ জনের প্রাণহানির কারণে বিশাখাপত্তনমের এলজি পলিমার্স কর্তৃপক্ষকে ৫০ কোটি টাকা অন্তর্বর্তী কালীন জরিমানা করল জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনাল। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা হল, তার কারণ দর্শাতে বলে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক, এলজি কর্তৃপক্ষ, অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং বিশাপত্তনমের জেলাশাসকের কাছেও নোটিস দিয়ে ১৮ তারিখের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইবুনাল। প্রশ্ন উঠেছে, বন্দর শহর বিশাখাপত্তনমের উপকণ্ঠে বেঙ্কটপুরমের মতো জনবহুল এলাকায় রাসায়নিক কারখানা এবং প্রাণঘাতী রাসায়নিক সঞ্চয়ের অনুমতি কী ভাবে দেওয়া হল এলজি কর্তৃপক্ষকে?

Advertisement

বহস্পতিবার রাতে কারখানাটি থেকে আরও গ্যাস লিক হওয়ার খবরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। কিন্তু সকালে এনডিআরএফ-এর ডিরেক্টর জেনারেল এস এন প্রধান জানান, এ খবর ঠিক নয়। গুজরাতের দমন থেকে বিশেষ রাসায়নিক এনে গ্যাস নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। নাগপুর ও পুণে থেকে বিশেষজ্ঞরা এসে কাজ শুরু করেছেন। পরে এলজি কর্তৃপক্ষও জানান, নতুন করে গ্যাস লিক হয়নি। রাজ্য প্রশাসনের দাবি, বেঙ্কটপুরমের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। জেলাশাসক ভি বিনয়চাঁদ জানিয়েছেন, জমিয়ে রাখা স্টাইরিনের ৬০ শতাংশকেই পলিমারে পরিণত করার ফলে ভয় কেটেছে।

মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই জগন্মোহন রেড্ডি এ দিন বিশাখাপত্তনমের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। ১৮ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জেলাশাসক তাঁকে জানান। উপ-মুখ্যমন্ত্রী (স্বাস্থ্য) এ কে কে শ্রীনিবাস এ দিন অন্য মন্ত্রীদের নিয়ে এলজি-র কারখানা এবং কিং জর্জ সরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। পরে তিনি জানান, ৫২ জন শিশু-সহ ৩০৫ জন এই সরকারি হাসপাতালটিতে ও কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে ১২১ জন গ্যাসে অসুস্থ হয়ে ভর্তি রয়েছেন। সকলেই বিপন্মুক্ত। আশ্রয় শিবির খুলে কারখানার আশপাশের এলাকার ১৫ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছিল প্রশাসন। সেখান থেকে কয়েকশো মানুষ ঘরে ফিরেছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: ভোপালের ছায়া বিশাখাপত্তনমে, গ্যাস লিকে মৃত ১১, অসুস্থ ১০০০

লিক হওয়া স্টাইরিন গ্যাসের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব আরও মারাত্মক! বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জনবহুল এলাকায় রাসায়নিকের কারখানা স্থাপনের অনুমতি কী করে দেওয়া হল সে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী রেড্ডিকে চিঠি দিয়েছেন প্রাক্তন রাজস্বসচিব ই এ এস শর্মা। অনুমতি দেওয়ার জন্য দায়ী রাজ্য দূষণ পর্ষদের অফিসারদের কঠিন শাস্তি দাবি করেন এই প্রাক্তন আমলা। ভোপালের গ্যাস-দুর্গতদের অধিকার আদায়ে কাজ করা পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, প্রাণঘাতী অবহেলার পরেও কারখানা কর্তৃপক্ষ যেন ছাড় না পান। তাঁর কথায়, “ছত্রিশ বছর লড়াই করেও ভোপালের গ্যাস-দুর্গতরা বিচার পায়নি। বিশাখাপত্তনম পারুক।” তাঁর আশঙ্কা, ভোপালের মতো এখানেও অসুস্থদের শরীরে বিষ-গ্যাসের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন